রাজধানীতে দুই বাসের চাপায় হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে রায় ঘোষণা হবে আগামী ২০ জুন। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের বেঞ্চ। শুনানিতে রিটের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের (বিআরটিসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাতার হোসেন সাজু।
এর আগে গেল বছর ৮ মে এক আদেশে রাজীব হাসানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি) ও বেসরকারি পরিবহন কোম্পানি স্বজন পরিবহনের মালিককে ৫০ লাখ টাকা করে পরিশোধ করতে বলা হয়।
গেল বছর ৩ এপ্রিল রাজধানীতে বেপরোয়া গতির একটি বাস আরেকটি বাসকে ধাক্কা দেয়। এতে একটি বাসে থাকা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী রাজিব হাসানের (২২) ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার দিন বেলা দেড়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের দিক থেকে ফার্মগেটমুখী একটি দ্বিতল বিআরটিসি বাস সার্ক ফোয়ারার কাছে পান্থকুঞ্জের পাশে সিগনালে থেমে ছিল। পরে একই দিক থেকে আসা স্বজন পরিবহন নামের একটি বাস দ্রুতগতিতে এসে দোতলা বাসের পাশের ফাঁক দিয়ে ঢুকে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় যাত্রী রাজিব হাসানের ডান হাত দ্বিতল বাসের সঙ্গে লেগে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং হাতটি দ্বিতল বাসের সঙ্গে লেগে ঝুলছিল।
পরে তাৎক্ষণিকভাবে রাজিবকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনযুক্ত করে প্রতিকার চেয়ে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস। পরের দিন ৪ এপ্রিল রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এক আদেশে রাজীবের হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় তার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে কার্যকর করতে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আইন সংশোধন বা নতুন করে বিধিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। জবাব দিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। রুলটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ১৬ এপ্রিল সোমবার রাতে রাজিব মারা যান।