রাজধানীর শ্যামলী থেকে নিখোঁজের ১০ দিন পর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইসমাইল হোসেন জিসানের (২৪) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুরের গাছা থানার কামারজুরি এলাকার মধ্যপাড়ার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতর থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের ধারণা, মোটরসাইকেল ছিনতাই করতে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে গাজীপুরের ওই সেফটিক ট্যাঙ্কে লাশ লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হাসিবুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের পাশের ফুটপাতে বৃহস্পতিবার সকালে শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে এক মেয়ে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ১২ মে রাজধানীর শ্যামলী থেকে মোটরসাইকেলে গাজীপুরে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন জিসান। এ ঘটনার পরের দিন গাজীপুরের গাছা থানা এবং চারদিন পর ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মৃতের বাবা সাব্বির হোসেন শহীদ।
জানা গেছে, মৃত জিসান গাজীপুর জেলার গাছা থানার কাথোরা গ্রামের সাব্বির হোসেন শহীদের ছেলে। রাজধানীর ইউরোপিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি। তার মা ভাতের হোটেলের দোকান দিয়ে সংসার চালান। ফলে আর্থিক অনটনের ফলে তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপ উবার চালিয়ে পড়ালেখার খরচ চালাতেন। রাজধানীর শ্যামলীর ২ নম্বর রোডের ১৬/ডি বাসায় এক বন্ধুর সঙ্গে থাকতেন তিনি।
শেরেবাংলা নগর থানার ওসি জানে আলম মুন্সি বলেন, নিখোঁজের দিন অফলাইনে শ্যামলী থেকে গাজীপুরে যায় জিসান। এরপর থেকে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। এক পর্যায়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গোপন সূত্রে জানা যায় এ ঘটনার সন্দেহভাজন হাসিবুল ইসলাম নামে এক যুবক। পরে বুধবার রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাতেই হাসিবুল ইসলামকে নিয়ে গাজীপুরে অভিযানে যায় পুলিশের একটি টিম। কিন্তু রাতে ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় জিসানের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার সকালে কামারজুড়ি এলাকার একটি বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে জিসানের লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জিসানের মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে। ওসি আরও বলেন, হাসিবুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, উবারের মাধ্যমে অফলাইনে গাজীপুরে ভাড়ায় যায় জিসান। সেখানে তার মোটরসাইকেলটি ছিনতাই করতে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার সঙ্গে আরও একজনের জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে হাসিবুল ইসলাম। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।