‘দরিদ্রতার কারণে’ সন্তানদের ভরণপোষণ ঠিকমতো দিতে না পারার কষ্ট সইতে না পেরে নিজের ঔরস্যজাত দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন এক বাবা। শুক্রবার রাতে নরসিংদীর লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুমে শ্বাসরোধে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতদের বাবা শফিকুল ইসলামকে আটক করেছে। শনিবার দুপুরে নরসিংদীর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান।
আটককৃত শফিকুল জেলার মনোহরদী চালাকচর গ্রামের বাসিন্দা। নিহতরা হলো ১১ বছরের তাইন ও চার বছরের তাইবা। শফিকুল ইসলাম নরসিংদীতে একটি
পোশাক কারখানায় নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কাজ করেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শুক্রবার রাতে লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুম থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করার পর থেকে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রথমে নিহতদের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শফিকুল ইসলাম হত্যার কথা স্বীকার করেন। পুলিশ সুপার জানান, ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে মনোহরদী গ্রামের বাড়ি থেকে দুই সন্তানকে শিবপুর নিয়ে আসেন তিনি। চিকিৎসক না থাকায় তিনি তার সন্তানদের নরসিংদী লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরতে নিয়ে যান। ওই সময় তার ছোট মেয়ে লিচু খেতে চায়। কিন্তু তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তার ওপর সামনে ঈদ। সংসারের খরচ ও ঈদে সন্তানদের জামা-কাপড় দিতে হবে। এসব ভেবে শফিকুল হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েন। পরে প্রথমে ছোট মেয়েকে লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুমে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে বড় মেয়েকে একই কায়দায় হত্যা করে বাথরুমে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও মামলা করা হয়নি। পরিবার মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে শফিকুল ইসলামকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হয়েছে। কারণ তিনি একেকবার একেক রকম কথা বলছেন।