আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৬-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লী ঈদে কর্মমুখর

আবদুস ছামাদ খান, চৌহালী
| শেষ পাতা

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। তাঁতের খট-খট ও ঝুম ঝুম শব্দ জানান দিচ্ছে সামনে ঈদ আসছে। ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক ও শ্রমিকরা। জামদানি, সুতি জামদানি, সুতি কাতান, চোষা, বেনারসি, শেড শাড়ি, লুঙ্গিসহ নানা ধরনের পোশাক তৈরি হচ্ছে এখানে। শাড়ির ওপর বর্ণিল সুতা, বাক ও চুমকিরও কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া কাপড়ের ওপর প্রিন্টসহ রংতুলি দিয়ে নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর নানা নকশাও দেওয়া হচ্ছে। এখানকার বিভিন্ন নকশার তৈরি কাপড়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে ভারত, আমেরিকা ও ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। যে কারণে ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী কাপড় সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁত কারখানার মালিকরা। জেলার তাঁত প্রধান এলাকা হিসেবে খ্যাত বেলকুচি, এনায়েতপুর শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তাঁতিরা কাপড় বুনছেন আপন মনে। তাঁত মালিকরা ব্যস্ত পাইকারদের নিয়ে। একই সঙ্গে পুরুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নারী শ্রমিকরাও নলি ভরা, সুতা পারি করা, মাড় দেওয়া ও রংতুলিতে নকশা আঁকাসহ কাপড় বুননের কাজেও সহযোগিতা করছেন। এদিকে, বিবিয়ানা, রং, কে-ক্রাফট ও নগরদোলাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় বুটিক প্রতিষ্ঠানের কাপড় এখন বেলকুচি অঞ্চলে তৈরি হয়। বুটিক হাউসগুলোর নিজস্ব ডিজাইনে রেশম সুতা, খাদি, নয়েল, ডুপিয়ান ও অ্যান্ডি সুতা ব্যবহার করে তাতে প্যালেস ও জরি মিশ্রিত করে কাপড় তৈরি করা হচ্ছে। বুটিক হাউসের ওড়না, থান কাপড়

ও অ্যান্ডি থান কাপড়ের ফেব্রিক্স তৈরি করা হচ্ছে এখানে। এ দিয়ে নানা ধরনের পোশাক তৈরি করছে বুটিক হাউসগুলো। তরুণ-তরুণীদের কথা মাথায় রেখে তাঁতিরা উন্নতমানের জামদানি নকশা, শেড ও থান কাপড় তৈরি করছে। এ দিয়ে পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ আর ফতুয়া তৈরি হচ্ছে। জামদানি থ্রি-পিস দুই থেকে ৩ হাজার টাকা এবং চেক থ্রি-পিস ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, ঈদ সামনে রেখে ভারতের বাজারের সঙ্গে টক্কর দিতে ক্রেতাদের নজর কাড়তে ভারতের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালের নাম অনুযায়ী কাপড়ের নাম রাখা হচ্ছে। কাপড়গুলো হাফ সিল্কের ওপর ঝুটের মনোমুগ্ধকর নকশা করা। ইতোমধ্যেই এসব কাপড় ক্রেতাদের মন কেড়েছে। ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় এসব কাপড় বিক্রি হচ্ছে। 

মনিহার টেক্সটাইলের মালিক আবদুল মজিদ খান বলেন, বর্তমানে কাপড়ের চাহিদা ভালো সামনে ঈদ কিন্তু ঠিক মতো বিদ্যুৎ না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে কাপড় তৈরিতে। রুচিশীল ক্রেতাদের বিষয়টি খেয়াল রেখেই ভারত থেকে জুট এনে তা দিয়ে হাতে বিভিন্ন নকশা করে শাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাজারে এ শাড়ির চাহিদা আকাশছোঁয়া। পাইকাররা অগ্রিম টাকা দিচ্ছেন এ শাড়ির জন্য। এদিকে নাহিদ উইভিং ফ্যাক্টরির মালিক দেলবার হোসেন বলেন, কাপড়ের দামের চেয়ে সুতা রং ও অন্যান্য কাঁচামালের দাম বেশি হওয়ায় শাড়ি তৈরি করা অনেক কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।