দুয়ারে ক্রিকেটের মহাযজ্ঞ বিশ্বকাপ; উত্তাপে কাঁপছে ক্রিকেট বিশ্ব। স্বাগতিক ইংল্যান্ডে চলছে ট্রফি প্রদর্শন করে আমেজ ছড়ানো। আর ট্রফিকে সামনে পেয়ে উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরাও - সংগৃহীত
বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর্দা উঠবে আর মাত্র চার দিন পর। ক্রিকেটের জন্মভূমি ইংল্যান্ডে ৩০ মে শুরু হবে ক্রিকেট মহাযজ্ঞ। এরই মধ্যে বিশ্বকাপে খেলা দেখার টিকিট পাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে কাড়াকাড়ি। বিশ্বকাপের টিকিট পেলে রথ দেখা হবে, কলাও বেচা হবে। মানে একসঙ্গে বিলেত দর্শন ও বিশ্বকাপের খেলা দেখা।
এ সুবর্ণ সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে দেশ-বিদেশ থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে টিকিট চাচ্ছেন অসংখ্য টাইগার ভক্ত। এজন্য অনেকে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ধরণা দিচ্ছেন। তাই বাধ্য হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কাছ থেকে টিকিট কিনেছে বিসিবি! বোর্ডের ক্রিকেট পরিচালকরা জানান, আনুমানিক ২ কোটি টাকার টিকিট কেনা হচ্ছে। বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্টেকহোল্ডারদের কিছু টিকিট দিতে হবে। আমরা আইসিসির কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টিকিট পাই। তবে তা দিয়ে চাহিদা মেটে না। সবার ইচ্ছা পূরণ করতে কিছু টিকিট কিনতে হচ্ছে। হাতে পাওয়ার পরই এ সংখ্যা জানানো হবে। বিশ্বকাপের প্রতিটি ম্যাচের জন্য আইসিসি থেকে ১০০টি করে সৌজন্য টিকিট পাবে বিসিবি। লিগ পর্বের ৯ ম্যাচের জন্য পাওয়া যাবে ৯০০ টিকিট। মূলত খেলোয়াড়দের জন্য এ টিকিট দিয়েছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তবে এ থেকে ক্রিকেটারদের জন্য ম্যাচ প্রতি দুটি করে টিকিট বরাদ্দ করেছে বিসিবি। বাকি ৭০টি টিকিট নিজেদের কাছে রেখে দেবে। ৯ ম্যাচে ৬৩০টি টিকিট থাকবে হাতে। এখান থেকে পরিচালকদের ম্যাচ প্রতি দেওয়া হবে দুটি করে টিকিট। ২৫ পরিচালকের জন্য ৯ ম্যাচে বরাদ্দ থাকবে ৪৫০টি টিকিট। স্বাভাবিকভাবেই অবশিষ্ট ১৮০টি টিকিট দিয়ে বিশাল চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, ঢাকার ক্লাব ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের চাহিদা মেটাতে টিকিট কিনতে হচ্ছে। পরিচালকরাও বোর্ডের কাছ থেকে তা কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বিশেষ করে ঈদ সামনে থাকায় চাহিদা বেড়ে গেছে। তাই টিকিট কিনতে কয়েক কোটি টাকা গুনতে হচ্ছে। কত টাকার টিকিট কেনা হচ্ছে জবাবে বিসিবি সিইও বলেন, টিকিট হাতে পাওয়ার পর টাকার অঙ্ক জানাতে পারব। খুব বেশি খরচ হবে না। আমরা আইসিসির কাছে যে পরিমাণ টিকিট চেয়েছি তা নাও পাওয়া যেতে পারে। কারণ অন্য বোর্ডগুলোও টিকিট কিনবে। তিন কোটি টাকার সমপরিমাণ টিকিট চেয়ে ‘রিকুজিশন’ দেওয়ার সুযোগ রেখেছে আইসিসি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবি এক পরিচালক জানান, তিন কোটি টাকা সমমূল্যেরই টিকিট চাওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত হয়তো দুই কোটি টাকার পাওয়া যাবে। একটি সূত্র জানিয়েছে, ২২ মে লন্ডন থেকে টিকিট সংগ্রহ করেছেন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা। বেশিরভাগ টিকিটই সেখান থেকে পার্সেলে করে ঢাকায় পাঠিয়েছেন তিনি। দু-একদিনের মধ্যেই তা পৌঁছে যেতে পারে। আর কিছু টিকিট ইংল্যান্ডে জাতীয় দলের ম্যানেজারের কাছে রেখে দেওয়া হয়েছে। বিশ্বকাপের টিকিট কিনতে আইসিসির সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ করেছেন বিসিবি প্রেসিডেন্টের পিএস তৌহিদ মাহমুদ। তিনি বলেন, কেনা টিকিটের ১০ শতাংশ রাখবে বিসিবি। সেগুলো রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দেওয়া হতে পারে। বাকি ৯০ শতাংশ কেনে নেবেন বোর্ড পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কেবল টাকা পরিশোধের পরই টিকিট দেওয়া হবে। তবে বিসিবির কাছ থেকে টিকিট পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন স্টেকহোল্ডাররা। এক পরিচালক জানান, ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের কথা বলে টিকিট কেনা হচ্ছে। তবে প্রভাবশালীরাই তা ভাগবাটোয়ারা করে নিতে পারেন।