আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৭-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

প্রাথমিকে রান্না করা খাবার

এবার এনজিওগুলো এগিয়ে আসুক

| সম্পাদকীয়

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে দুপুরে রান্না করা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। দেশের ১০৪টি উপজেলার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩২ লাখ শিক্ষার্থীকে এ খাবার প্রদান করা হবে। জাতীয় স্কুল মিল নীতি অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে এ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। আলোকিত বাংলাদেশে প্রকাশ, এ কার্যক্রমের আওতায় খুলনা অঞ্চলের ২৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ৪৪ হাজার ৪৪৯ শিক্ষার্থীকে আনা হয়েছে। ১ জুলাই থেকে এখানকার শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে তিন দিন দুপুরে রান্না করা খাবার ও তিন দিন বিস্কুট সরবরাহ করা হবে। দুপুরের ক্ষুধা নিবারণ, পুষ্টির অভাব পূরণ, ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যবান জাতি গঠন, শতভাগ উপস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া বন্ধ করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে রান্না করা খাবার সরবরাহের সিদ্ধান্ত সাধুবাদ পাওয়ার দাবি রাখে। উল্লেখ্য, এর আগে এখানে প্রতিদিন বিস্কুট দেওয়া হতো। বিস্কুটে একঘেয়েমি এসে যেত শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ফলে সামনে রান্না করা খাবার প্রদানের ব্যবস্থা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তাদের একঘেয়েমি কাটাবে।
গ্রাম বা মফস্বলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুরা সাধারণত আসে দরিদ্র পরিবার থেকে। অনেকেই ভালোভাবে খেয়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেকের বিদ্যালয়ে খাওয়ার জন্য তেমন কিছু নিয়ে আসার সুযোগও থাকে না। তাই দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণেই পেটে ক্ষুধা থাকায় পাঠে মনোনিবেশ করতে পারে না তারা। পাশাপাশি পুষ্টির অভাবে মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়। একটি অংশ একপর্যায়ে ছেড়ে দেয় লেখাপড়া। বাড়তে থাকে ঝরেপড়ার হার। শতভাগ লোককে শিক্ষিত করার স্বপ্ন অধরা থেকে যায়। এমন পরিস্থিতিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুরোপুরি শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে অবশ্যই প্রাথমিক স্তরে অনেক বেশি সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো উচিত।
পৃথিবীর অনেক দেশ রয়েছে, যেখানে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি স্কুল ফিডিংয়ে এগিয়ে আসে। উল্লেখ্য, ভারতে অক্ষয়পাত্র ফাউন্ডেশন বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ১৫ লাখ শিশুকে প্রতিদিন রান্না করা খাবার পৌঁছে দেয়। তারা প্রায় ২০টি ‘সেন্ট্রাল কিচেনের’ মাধ্যমে এ খাবার রান্না করে। এক মাসে তারা শিশুদের প্রায় ১৮ পদের খাবার দেয়। এর সঙ্গে আবার দুধের প্যাকেটও দেওয়া হয়। বাংলাদেশে বহু সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তারাও কোনো কোনো অঞ্চলে এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে। পাশাপাশি সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে, স্কুলে শিশুদের পুষ্টিকর খাবার প্রদানের কর্মসূচিতে যেন কোনোভাবে অনিয়ম না হয়। সবসময়ই যেন খাবারের মান রক্ষা করা হয়। শতভাগ ভর্তি নিশ্চিত, শিক্ষার্থীদের নিয়মিত উপস্থিতির হার বৃদ্ধি ও শিশুদের দৈনন্দিন পুষ্টি চাহিদা পূরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের এমন কার্যক্রম দেশব্যাপী চালু করবেÑ এমনটাই প্রত্যাশা। হ