আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৭-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

চট্টগ্রামে কদর কমেছে আমদানি করা ফলের

বাজারে মধু ফলের সৌরভ

শানে আলম সজল, চট্টগ্রাম
| শেষ পাতা

চলছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ। হরেক রকমের রসাল ফলের সমাহার নিয়ে বাংলা এ মধু মাসের আগমন। আর মধু মাসের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই মধু ফলে চেয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরীর ফলের বাজার। বাজারে মিলছে আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল, পেঁপে, আনারস, বাঙ্গি, জামরুলসহ নানা রকম ফল। বাজারে বাজারে সৌরভ ছড়িয়ে পড়ছে মধু ফলের। এদিকে মধু মাসের ফল বাজারে আসায় কমেছে আমদানি করা ফলের চাহিদা। বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি করা ফল আপেল, আঙ্গুর, মাল্টা, ডালিমের চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও কমেছে। বৈশাখের তাপপ্রবাহের পর সারা দেশ মেতে উঠেছে মধু ফলে। গ্রাম থেকে শহরে, দোকানে কিংবা বাসাবাড়ির অলিগলিতে মিলছে এসব মিষ্টি রসাল ফল। ফল বিক্রেতারাও বলছেন, জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে না আসতে ফল বিকিকিনি বেড়ে গেছে।

রোববার নগরীর বিভিন্ন ব্যস্ততম এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পবিত্র রমজানের ইফতারের তালিকায় গুরুত্বপূর্ণ অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে জ্যৈষ্ঠ মাসের রসাল ফলগুলো। নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে মধু মাসের ফল লিচু ও আম বিক্রি করছেন মো. তৈয়ব। রাজশাহীর হিমসাগর জাতের আম বিক্রি করছেন ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে। লেংড়া আম বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা দরে প্রতি ১০০ পিস লিচু বিক্রি করছেন তিনি। মো. তৈয়ব বলেন, ফলের বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকায় আমের দাম কমতির দিকে। লিচু পাকতে শুরু করেছে। বাজারে বাঁশখালী ও পার্বত্য জেলার লিচুর সরবরাহ বেশি। 

এছাড়া রাজশাহী থেকে লিচু বাজারে আসায় দাম হাতের নাগালে রয়েছে। রমজানে ইফতারের উপকরণ হিসেবে রসালো ফল আম লিচু ও আনারস কিনছেন ক্রেতারা। আবদুর রহিম নামে এক দিন মজুর ২৮০ টাকা দরে ৫০ পিস লিচু নিলেন ১৪০ টাকায়। তিনি বলেন, বাজারে হরেক করমের লিচু আসাতে দামও কিছুটা কমেছে। সামনের দিনে আরও কমবে বলে ধারণা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের। নগরীর মোমিন রোডে একদাম ৮০ টাকা ডাক দিয়ে প্রতি জোড়া আনারস বিক্রি করছেন ফল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম। ক্রেতারাও দেখে দেখে কিনছেন আনারস। বড় আকারের আনারস বিক্রি করা হচ্ছে ১২০ টাকা জোড়া। এছাড়া চকবাজার এলাকায় ভ্যান নিয়ে রাজশাহীর লিচু বিক্রি করছেন রবিউল আলম। তিনি বলেন, রাজশাহীর লিচুর চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ পিস লিচু ৪০০ টাকা করে বিক্রি করছেন তিনি। নগরীর চেরাহী পাহাড় এলাকায় বিগত

কয়েক বছর ধরে আমদানি করা ফল বিক্রি করে আসছেন পটিয়ার বাসিন্দা আমজান আলী। আমদানি করা ফলের দাম বেশি হওয়ার কারণে তারা এখন দেশি ফল আম, লিচু ও আনারসও বিক্রি করছেন তিনি। আমজাদ আলী বলেন, রমজানে ফলের চাহিদা থাকে অনেক বেশি। কিন্তু বিদেশি ফলের দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কম কিনছেন আপেল, মাল্টা ও আঙ্গুর। জ্যৈষ্ঠ মাসের ফল আম, লিচু, আনারস বাজারে আসাতে এসব ফলের দিকে আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। তাই আপেল, আঙ্গুর, মাল্টা, ডালিম বিক্রি না করে আম ও লিচু বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতি ১০০ পিস রাজশাহীর লিচু বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৮০ থেকে ১০০ টাকায় প্রতি কেজি হিম সাগর আম বিক্রি হচ্ছে। 

নগরীর আন্দরকিল্লা মোড়ে নিয়মিত আপেল, আঙ্গুর, মাল্টাসহ আমদানি করা ফল বিক্রি করে আসছেন পঞ্চাশোঊর্ধ্ব বয়সি মো. হাফেজ আলী। তিনি বলেন, বিদেশি ফলের দাম অনেক বেশি। ২২০ টাকায় প্রতিকেজি আপেল বিক্রি হচ্ছে, লাল আঙ্গুর কেজি ৪০০, সবুজ আঙ্গুর কেজি ২০০ থেকে ২২০, মাল্টা প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং ২০০ থেকে ২২০ টাকায় প্রতি কেজি ডালিম বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশীয় ফল আম, লিচু, কাঁঠাল ও আনারস বাজারে আসায় আমদানি করা ফলের বিক্রি কমেছে। তাই অন্যান্য ফলের সঙ্গে আম ও আনারসও বিক্রি করতে হচ্ছে।