আমের শহর রাজশাহী। কিন্তু মধুমাস জ্যৈষ্ঠ চলে এলেও বাজারে তেমন একটা আম নেই। আমের রাজ্য রাজশাহীর ফলবাজার এখন লিচুতে ঠাসা। বাজার ছাড়াও বাসস্ট্যান্ড, ফুটপাত সবখানেই লিচু আর লিচু। জ্যৈষ্ঠের শুরু থেকেই এবার রাজশাহীর বাজারে রাজত্ব করছে এ মৌসুমি ফল।
অপরিপক্ব আমের বাজারজাত ঠেকাতে গেল কয়েক বছরের মতো এবারও আম নামানোর সময় বেঁধে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী, ১ জ্যৈষ্ঠ থেকেই গুঁটি জাতের আম নামানোর অনুমতি রয়েছে। আর উন্নত জাতের গোপালভোগ পাড়ার সময় শুরু হয়েছে ২০ মে থেকে। এখন বাজারে কিছু গুঁটি জাতের আমের দেখা মিললেও গোপালভোগ পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। অথচ আগের বছরগুলোয় সময়সীমার আগেই গাছে গাছে পেকেছিল আম। অনেক চাষি প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই লুকিয়ে-ছাপিয়ে আম নামাতেও শুরু করেছিলেন। এবার গুঁটি ও গোপালভোগ নামানোর বাধা কাটলেও বাজারে আম নেই। চাষিরা বলছেন, জেলা প্রশাসন ছক কষে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করে দিলেও আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে বিভিন্ন জাতের আম এখনও গাছে পরিপক্বতা পায়নি। এর ওপর তাপপ্রবাহের মধ্যে রমজান মাস চলছে।
রাজশাহী মহানগরীর ছোট বনগ্রাম এলাকার আম চাষি ও ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময় মতে এখনই অনেক গাছ থেকে আম নামানো যাবে। কিন্তু গাছে রাখলেও ক্ষতি নেই, বরং লাভই আছে। একদিকে আমে পরিপক্বতা আসবে অন্যদিকে ঈদের পরের বাজারে শুধু আমই থাকবে। এদিকে, বুধবার জেলার সবচেয়ে বড় আমের হাট পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ছাড়াও শহরের শালবাগান ও নওদাপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, আমের হাট ফাঁকা বললেই চলে। বানেশ্বরে কিছু আমের বেচাকেনা শুরু হলেও শালবাগান ও নওদাপাড়ায় তার ছিটেফোঁটাও নেই। লিচু, তরমুজসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলে এখনও ভরে আছে প্রতিটি আড়ত। এ আড়তগুলোই গেল বছর আমে ভরা ছিল।
সময় বেঁধে দেওয়া ও আম ভাঙা প্রসঙ্গে রাজশাহী ফল গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন বলেন, আম যখন আসবে তখনই বাজার জমে উঠবে। দেরি হলেও কোনো ক্ষতি নেই। আবার নামানোর ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দেওয়ায় কোনো ক্ষতি হয়নি।