সারা দেশের ন্যায় খুলনায়ও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবারগুলোর। খুলনায় সরকারি ক্যান্সার হাসপাতাল নেই। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি ক্যান্সার ইউনিট রয়েছে, যেখানে কোনো ইনডোর ওয়ার্ড নেই। চিকিৎসক আছে মাত্র দুইজন। ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা ও খরচ কমাতে সরকার আটটি বিভাগে আটটি ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে খুলনায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ হবে।
১৮ মার্চ রাজধানীর মিরপুরে ‘সচেতনতায় জীবন বাঁচায়’ শীর্ষক ক্যান্সার সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, দেশের দরিদ্র জনগণকে স্বল্প খরচে ক্যান্সার চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিক। সরকার ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি বিভাগে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর ফলে ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা দেশের সর্বত্র পৌঁছে দেওয়া অনেকটাই সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি বছর দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রায় ৯১ হাজার বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে। ক্যান্সারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবক্যানের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ১৩ থেকে ১৫ লাখ। এছাড়া বর্তমানে দেশের গড়ে প্রায় ৪ কোটি পূর্ণ বয়স্ক মানুষ বিভিন্ন উপায়ে তামাক ব্যবহার করে। শুধু ধূমপান বর্জন করলে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিট সূত্র জানান, ২০১৮ সালে খুলনা বিভাগে বিভিন্ন স্থান থেকে ক্যান্সার আক্রান্ত ২ হাজার ২৫৯ জনকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে পুরুষ ৯৪১ জন ও মহিলা রয়েছে ১ হাজার ৩১৮ জন। এছাড়া ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৩৯১ জন ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তিকে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের মানুষের ক্যান্সার চিকিৎসায় উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ২০১২ সালের জুলাই মাসে লিনিয়র এক্সেলেটর বা রেডিওথেরাপি মেশিনটি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। মেশিনটি ক্যান্সার বিভাগের ভবনের সামনে রাখা হয়। তখন থেকে আজ অবধি সেখানেই পড়ে আছে মেশিনটি। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান ডা. মুকিতুল হুদা বলেন, এ মেশিনটি তখন ভুল করে আনা হয়েছিল। এ মেশিন প্রতিস্থাপন করতে অন্যান্য মেশিন আমাদের নেই। তাই মেশিনটি ফেরত নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের এখানে রেডিওথেরাপি মেশিন স্থাপনের জন্য বাঙ্কার নির্মাণ কাজ চলছে, যা চলতি বছর শেষ হবে। তখন অন্য একটি উন্নত মেশিন পাওয়া যাবে। খুলনায় ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণের বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য পাননি বলেও জানান তিনি।