দেশের সড়ক যোগাযোগে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন লক্ষ করা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় মেঘনা সেতু এবং দ্বিতীয় গোমতী সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শনিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতু দুটি উদ্বোধন করেন। একই সময় প্রধানমন্ত্রী কোনাবাড়ী ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার, কালিয়াকৈর, দেওহাটা, মির্জাপুর ও ঘারিন্দা আন্ডারপাস এবং কাড্ডা-১, সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্পের আওতায় জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে বিমাইল সেতুরও উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি একই দিনে দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতিহীন ট্রেন সার্ভিস পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করা যায়, উদ্বোধিত এ স্থাপনাগুলো ঈদযাত্রাকে অন্যান্যবারের তুলনায় আরামদায়ক ও স্বস্তিদায়ক করবে।
সার্বিক বিবেচনায় বলা যায়, ২৫ মে শনিবার ছিল বাংলাদেশের যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী দিন। একই দিনে বাস্তবায়িত এতগুলো প্রকল্পের সফল উদ্বোধন একটি বিরল ঘটনা বটে। পাশাপাশি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে কিছু উচ্ছ্বাসপূর্ণ পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেছেন। বলেছেন, ঢাকায় মেট্রোরেল চালুর পর বিদ্যুৎচালিত ট্রেন চালুর পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের, যা হবে একান্তভাবে পরিবেশবান্ধব। এদিকে ‘পঞ্চগড় এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বর্তমান সরকার ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগামী পর্যটন ট্রেন চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তিনি আরও বলেন, দেশে উন্নত ও আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন করার পাশাপাশি সবার উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা মানুষের জীবনমানের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে জাতীয় জীবনকে একটি বৃন্তে যুক্ত করতে সহায়তা করে। আজকের বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার যে রূপকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে চলেছে এর জন্য যোগাযোগ খাতের আমূল অগ্রগতি আবশ্যক। আশার কথা হলো, সরকার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথের উন্নয়নে সরকারের প্রয়াস প্রশংসাযোগ্য। তবে এক্ষেত্রে স্মরণীয় যে, অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত ব্যবস্থাপনাও জরুরি। পাশাপাশি নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে। তবেই যোগাযোগ খাতের উন্নয়ন সর্বক্ষেত্রে স্বস্তি বয়ে আনবে।