আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ২৮-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

প্রেমিক আটক নিয়ে গ্রামবাসী-পুলিশ তুলকালাম!

রাজশাহী ব্যুরো
| খবর

গভীর রাতে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন প্রেমিক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশকেও অবরুদ্ধ করে রাখেন উত্তেজিত গ্রামবাসী। পরে সকালে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রেমিক ও তার বন্ধুদের আটকের ঘটনার জেরে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলায় এ তুলকালাম কা- ঘটেছে।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান জানান, রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও পুঠিয়া উপজেলার ধোপাপাড়া গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে হায়দার আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে একই উপজেলার হারুগাতি গ্রামের বাসিন্দা ও সাতবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর। 
রোববার রাত ১২টার দিকে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে হারুগাতি গ্রামে যান হায়দার। এ সময় দুই বন্ধু নাদিম মোস্তফা ও রবিন হোসেনও তার সঙ্গে ছিলেন। মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, তার সঙ্গে হায়দারের সাক্ষাৎ হয়। এ সময় তার দুই বন্ধু পাশের বাজারে অপেক্ষায় ছিলেন। এ ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয়রা হায়দারসহ তার দুই বন্ধুকে আটক করে গণপিটুনি দেন। একপর্যায়ে প্রেমিক হায়দারের এক পায়ে লোহার রডও ঢুকিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। পরে খবর পেয়ে পুঠিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিতে যেতে চাইলে গ্রামবাসী বাধা দেন। তারা পুলিশকে জানান, সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিচার হবে। এ নিয়ে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
একপর্যায়ে মসজিদের মাইক থেকে পুলিশকে প্রতিহত করতে গ্রামবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত গ্রামের লোকজন গাড়ির চাকার হাওয়া ছেড়ে দিয়ে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। অভিযোগ রয়েছে, গ্রামবাসী থানার নারী পুলিশ সদস্যদেরও লাঞ্ছিত করেন। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। 
পরে ভোরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এক এক করে অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, আহত হায়দারকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুঠিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আরও একটি মামলা করা হবে। ওই মামলায় অভিযুক্তদের আটক করতে অভিযান চালানো হবে বলেও জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।