ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই সড়ক ও মহাসড়কে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। অনেক ক্ষেত্রে সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন দল ও সংস্থার নামে চাঁদা আদায় করে থাকে। বিশেষ করে পরিবহন খাতে এ ধরনের চাঁদাবাজি বেশি লক্ষ করা যায়। চাঁদা আদায় হয় হাটবাজারে, ফেরিঘাটে; সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রভাবশালীর নামে। সোমবারের আলোকিত বাংলাদেশে প্রকাশ, রাজশাহী মহানগরীর ভেতর তিনটি স্থানে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে। চাঁদাবাজি বন্ধে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে চিঠি দিলেও চাঁদা তোলা বন্ধ করা হচ্ছে না। সাধারণ শ্রমিকদের অভিযোগ, পুলিশ প্রশাসনের কাউকে কাউকে ‘ম্যানেজ’ করে স্থানীয় শ্রমিক নেতারা চাঁদা তুলে লুটপাট করছেন। রোববার সকালে সরেজমিন গেলে রাজশাহী মহানগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালের সামনের সড়কে পরিবহন থেকে চাঁদা তুলতে দেখা যায়। নগরীর নওদাপাড়া আমচত্বর এবং তালাইমারী মোড়েও একই চিত্র দেখা গেছে। উল্লেখ্য, ঈদকে সামনে রেখে আম-লিচুর এ মৌসুমে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে তারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আশঙ্কার কথা, এমন চিত্র যে শুধু রাজশাহীতেই দেখা যাচ্ছে তা নয়, রাজধানীসহ দেশের আরও অনেক শহরেরই সড়কে এমনটা দেখা যাচ্ছেÑ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
একটি সুস্থ সমাজ সর্বদাই আইনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। চাঁদাবাজি সুস্থ সমাজ কাঠামোয় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অনেকেই মনে করেন, এ চাঁদাবাজির কারণে সড়কে অনেক সময় যানজটেরও সৃষ্টি হয়। সড়কে বিশৃঙ্খলার পেছনে চাঁদাবাজি একটি বড় কারণ। এমন পরিস্থিতিতে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারীসহ অন্যান্য অপরাধীর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স প্রদর্শনের কোনো বিকল্প নেই। উল্লেখ্য, চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারের পর প্রায়ই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে তারা সহজেই ছাড়া পায়। ফলে জেল থেকে বের হয়ে চাঁদাবাজরা আরও সংহারী মূর্তি ধারণ করে। চাঁদাবাজদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আন্তরিকতা ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি বিচার ব্যবস্থার সংস্কার নিয়েও ভাবতে হবে।
জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে বিরাজমান আতঙ্ক দূর করে জননিরাপত্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেই নিশ্চিত করতে হবে। রাজশাহীসহ সারা দেশের সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোর ও কার্যকর ভূমিকা রাখবেÑ এমনটাই প্রত্যাশা।