নারায়ণগঞ্জের সোনারাগাঁ উপজেলার মেঘনা নদীতে অবৈধ দখল করে নির্মাণকৃত একটি তিনতলা ভবন, চার ডকইয়ার্ডের চারটি জাহাজসহ সীমানা প্রাচীর ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এ সময় নদী দখল করে ভরাটকৃত ১ লাখ ২৫ হাজার ঘনফুট বালু নিলামে ২০ লাখ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া মেঘনার শাখা নদীর প্রবেশমুখে ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাট করতে থাকায় ১২টি ড্রেজার পাইপসহ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া অরিয়ন গ্রুপের দখলকৃত জায়গায় পাইলিংয়ের কাজ করায় তিনজন ও ড্রেজার দিয়ে বালু ভরটা করায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে বিকাল সোয়া ৪টায় অরিয়ন গ্রুপের এক কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালীন সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাধা দেন, ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। পরে সাংবাদিকদের তোপের মুখে দ্রুত প্রস্থান করেন। তবে তার নাম জানা যায়নি।
ছয় দিনব্যাপী অভিযানের পঞ্চম দিনে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উপজেলার পিরোজপুর, চর বয়ারাদী ও চর গোয়লদী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মিয়ার নেতৃত্বে ওই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) শফিকুল হক, নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী, উপপরিচালক মো. শহীদুল্লাহ, সহকারী পরিচালক এহতেশামুল পারভেজসহ বিপুলসংখ্যক উচ্ছেদ কর্মী, পুলিশ ও আনসার সদস্য, বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারী।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মিয়া বলেন, সকাল থেকে একটি বিনোদন কেন্দ্রের তিনতলা ভবন, বালু দিয়ে নদী ভরাটকারী ১২টি ড্রেজার, অরিয়ন গ্রুপের পাঁচটি টিনের ঘর, জেটি নির্মাণ স্থাপনা, চারটি ডকইয়ার্ডের চারটি জাহাজ, ৩০ ফুট সীমানা প্রাচীর, বসুন্ধরা গ্রুপের ৬০ ফুট সীমানা প্রাচীর, বসুন্ধরা পেপার মিলের ৫০ ফুটের দেওয়াল এবং বসুন্ধরা পেপার মিলের নদী দখল করা ১ লাখ ২৫ হাজার ঘনফুট বালু নিলামের মাধ্যমে ২০ লাখ ৪ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়। এছাড়াও পাঁচজনের মধ্যে ভরাটকারী দুইজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, অরিয়ন গ্রুপের তিনজনের বিরুদ্ধে পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যে কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন তাকে সতর্ক করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক গুলজার আলী বলেন, ঈদের পর আরও জোরালো অভিযান পরিচালনা করা হবে। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে নদী দখল করা যাবে না। তাই যেসব স্থাপনা থাকবে সব ভেঙে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি নদী কমিশনের চেয়ারম্যান বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের কর্মকর্তাদের নিয়ে সরেজমিন মেঘনা নদী পরিদর্শন করেছেন। এ সময় মেঘনা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, আমান ইকোনমিক জোন, ইউনিক গ্রুপ, অরিয়ন গ্রুপ, আল মোস্তফা গ্রুপের পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজসহ বেশকিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নদী দখলের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সেগুলো পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হচ্ছে।