খুলনা-কলকাতা ট্রেন সার্ভিস বন্ধন এক্সপ্রেসে যশোরে যাত্রাবিরতি করে আসন বরাদ্দের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন হয়েছিল। ওই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ মার্চ যশোর স্টেশনে যাত্রীর জন্য যাত্রাবিরতি করে বন্ধন এক্সপ্রেস। কিন্তু বরাদ্দকৃত আসনের বিপরীতিতে যাত্রী মিলছে না। এ স্টেশনে বরাদ্দকৃত ৭৫ আসনের বিপরিতে কখনও অর্ধেক আবার কখনও তিন ভাগের এক ভাগ টিকিট বিক্রি হচ্ছে। যাত্রীদের ভাষ্য, সড়ক পথের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া, ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্সে ভোগান্তি ও যাতায়াতে অতিরিক্ত সময় লাগার জন্য যাত্রী সংকটে ভুগছে বন্ধন এক্সপ্রেস।
যশোর রেলস্টেশন সূত্র মতে, সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার খুলনা-কলকাতা রুটে চলাচল করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন যাত্রীবাহী ট্রেন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’। যশোর জংশনের জন্য ট্রেনটির আসন বরাদ্দ রয়েছে ৭৫টি। কিন্তু যশোর স্টপেজ চালুর পর থেকে ট্রেনটির কোনো যাত্রায় অর্ধেকের বেশি আসন পূর্ণ হয়নি। চলতি বছরের ৭ মার্চ যশোর স্টেশনে যাত্রীর জন্য যাত্রাবিরতি করে বন্ধন এক্সপ্রেস। প্রথম দিন ৭৫টি আসন বরাদ্দ থাকলেও ৩১ যাত্রী নিয়ে বন্ধন এক্সপ্রেস যাত্রা করেছিল। এরপর থেকে প্রতি যাত্রায় যাত্রীসংখ্যা নিচের দিকে নামছে। ২ মে ৩০ যাত্রী, ৯ মে ১৬, ১৬ মে ১১ এবং ২৩ মে ১৬ জন যাত্রী এ স্টেশন থেকে কলকাতা গেছেন। সম্পতি ভারতে যাওয়া যাত্রী যশোর সদরের দেয়াড়া ইউনিয়নের আনিসুর রহমান জানান, যাতায়াতের দিন ট্রেনটির প্রায়শই উভয় পাশ থেকেই ছাড়তে দেরি হয়। ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়। আর খুলনা থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওয়ানা হয় দুপুর ২টায়। ট্রেন খুলনা থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর কলকাতা স্টেশনে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পৌঁছানোর কথা থাকলেও রাত ৮টা বা ৯টা বেজে যায়। এর ফলে চিকিৎসা বা ভ্রমণের উদ্দেশে বের হওয়া যাত্রীরা সেখানে গিয়ে পড়েন আবাসন সংকটে।
যাত্রীদের দাবি, বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স শেষ হতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এখানে ১৩টি কাউন্টার থাকলেও সবগুলো সচল না থাকায় ক্লিয়ারেন্সে সময় বেশি লাগছে। ফলে কলকাতা পৌঁছতে দেরি হওয়ায় ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এজন্য ট্রেনে ওঠার আগেই ইমিগ্রেশনে যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা বলছেন তারা। তাহলে যাত্রী বাড়বে বলে মনে করছেন চিকিৎসা, ব্যবসা ও ভ্রমণের জন্য কলকাতায় নিয়মিত যাতায়াতকারীরা।
ভারতফেরত আরেক যাত্রী যশোর শহরের আরএন রোড এলাকার বাসিন্দা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ১২০ কিলোমিটার ট্রেন যাত্রায় এসি চেয়ারে নেওয়া হচ্ছে ভ্রমণকরসহ ১ হাজার ৫০০ টাকা ও এসি সিটে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ভ্রমণকরসহ ২ হাজার টাকা। অথচ বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে একজন পাসপোর্ট যাত্রীর কলকাতা যেতে ভ্রমণকরসহ খরচ হয় মাত্র ৬০০ টাকা। ফলে প্রায় আড়াই মাসে যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়ে কমছে। এতে লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষকে।
এ বিষয়ে যশোর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার নিগার সুলতানা জানান, যশোর থেকে বেনাপোল চেকপোস্ট কাছে থাকায় এ স্টপেজ থেকে যাত্রীর সংখ্যা কম। যাত্রীর ভাড়ার মূল্য যদি কম করে ও সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন যাওয়া-আসার ব্যবস্থা হয় যাত্রীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তিনি আশাবাদী।