আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

মূল পরীক্ষার অপেক্ষা

স্পোর্টস রিপোর্টার
| খেলা

ক্রিকেট দুনিয়ার সেরা হওয়ার বিশ্বযুদ্ধে নামছে এশিয়া-আফ্রিকা-প্যাসিফিক-কনকাকাফ মহাদেশের ১০টি দেশ। বিশ্বকাপ দিয়ে জন্মভূমিতে ক্রিকেট ফেরায় উন্মাতাল ব্রিটেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইংল্যান্ডে পৌঁছে গেছে খেলাপাগল মানুষ। উৎসবের কমতি নেই; সব বর্ণ-জাতি-গোত্

ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের হারের ব্যবধানটা যথেষ্টই বড়, ৯৫ রান। তবে সেই হারকে বড় করে দেখছে না বাংলাদেশ দল। ম্যাচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে অনেক। ভারতকে বাগে পেয়েও ছাড় দেওয়া হয়েছে অনেক কিছু বাজিয়ে দেখতে। বাংলাদেশের স্পিন কোচ সুনীল যোশি জানালেন, এই ম্যাচে প্রস্তুতিকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছে দল। এমন বড় হারের ম্যাচে প্রাপ্তি খুব বেশি থাকার কথা নয়। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়কের ঝুলি পূর্ণ না হলেও শূন্য নয়! এমনিতে হেরে যাওয়া ম্যাচে ইতিবাচক কিছু খুঁজে বের করার দিন বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছে। তবে প্রস্তুতি ম্যাচ বলেই সামনের পথচলার সঞ্চয় কিছু পেলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে মঙ্গলবার ভারতের কাছে ৯৫ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। লোকেশ রাহুল ও মহেন্দ্র সিং ধোনির সেঞ্চুরিতে ৩৫৯ রান তুলেছিল ভারত। বাংলাদেশ করতে পেরেছে ২৬৪। ম্যাচ অনেকটা বাংলাদেশের নাগালের বাইরে চলে গেছে প্রথম ইনিংসেই। ওয়ানডেতে কখনও ৩৩০ রানও তাড়া করতে পারেনি যে দল, ৩৬০ রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ তাদের জন্য ছিল একটু বেশিই কঠিন। বাংলাদেশের পেসাররা শুরুটা দারুণ করলেও ফাঁস আলগা হয়ে যায় স্পিনে। টাইগার স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশি জানালেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার তাগিদেই সেটি হয়েছে, ‘আয়ারল্যান্ডে ভালো প্রস্তুতি হয়েছে আমাদের। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ভালো সুযোগ ছিল। এখানে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। আজকে (মঙ্গলবার) তাই শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে আমরা ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে চেয়েছি।’ মাশরাফিদের স্পিন কোচ যোগ করেন, ‘এটি তো অনুশীলন ম্যাচ ছিল। এজন্যই অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন পরিস্থিতিতে, বিভিন্ন ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে আমাদের বোলাররা কেমন করে, সেটি দেখতে চেয়েছিলাম আমরা। আমাদের প্রায় সব বোলার বল করেছে, প্রায় সবাই ব্যাট করেছে। আমরা এটিই চেয়েছিলাম।’ এক পর্যায়ে ২২ ওভারে ৪ উইকেটে ১০২ রান ছিল ভারতের। এরপর স্পিন আক্রমণে আসার পর ধরে রাখা যায়নি চাপ। তারপরও পেসারদের না ফিরিয়ে স্পিন চালিয়ে নেওয়া হয়েছে। বোলিং করেছেন মোট ৯ জন বোলার। যোশির মতে, ম্যাচে জয় গুরুত্বপূর্ণ ভাবলে অনেক কিছুই অন্যভাবে করত বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ‘আমরা তো শুরুটা ভালো করেছিলাম, ১০২ রানে ৪ উইকেট ছিল ওদের। তখন সাকিব আরও কয়েক ওভার বোলিং করলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। কারণ সাকিব ও রুবেল ভালো বোলিং করছিল। রাহুল ও মাহি (ধোনি) খুব ধীরে এগোচ্ছিল তখন। আমরা তখন বোলারদের পরখ করতে চেয়েছি যে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কেমন করে। এরপর ওরা দুজন ভালো ব্যাট করেছে।’ 
ম্যাচের ফলের ব্যবধান বলছে, ম্যাচটি ছিল যথেষ্টই একতরফা। আদতে, ম্যাচের প্রথম ইনিংসের প্রথম ভাগে দাপট ছিল বাংলাদেশেরই। ভারতের শক্তিশালী টপ অর্ডারকে যথেষ্টই ভুগিয়েছে বাংলাদেশের পেস আক্রমণ। মোস্তাফিজুর রহমান ও মাশরাফি বিন মুর্তজা নতুন বলে যে সুর বেঁধে দেন, সে ছন্দেই তাল মিলিয়েছেন বোলার রুবেল হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। মাশরাফি জানালেন, ম্যাচ থেকে তার বড় প্রাপ্তি এই সময়টা, ‘আয়ারল্যান্ডে নতুন বলে আমরা সেভাবে উইকেট নিতে পারিনি। তাই পেস বোলিংয়ে ভালো শুরুর ইচ্ছে ছিল। মোস্তাফিজ দুর্দান্ত বোলিং করেছে। আমি চেষ্টা করেছি। রুবেল ও সাইফের কাছ থেকে যা চেয়েছি, অনেকটাই পেয়েছি।’ মোস্তাফিজকে ইদানিং নতুন বলে খুব একটা দেখা না গেলেও এ দিন আনা হয়েছে অধিনায়কের সুনির্দিষ্ট ভাবনা থেকে। মাশরাফি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে, নতুন বলে উইকেট নেওয়ার মতো একজনকে দরকার। এই জায়গায় ঘাটতি থেকে যাচ্ছিল। মোস্তাফিজ কাজটা দারুণভাবে করেছে। বেশি স্বস্তি পাচ্ছিÑ সে তার পুরোনো গতির অনেকটা ফিরে পেয়েছে। ১৪০ কিলোমিটার তুলেছে গতি। মোস্তাফিজ নিজের মতো বোলিং করলে আমাদের বোলিংয়ের ধারই অন্যরকম।’ এই ম্যাচ নিশ্চিত করে দিয়েছে, দুই  পেসারে বোলিং শুরু হলে বিশ্বকাপের শুরুর দিকে অন্তত বাংলাদেশের নতুন বল সামলাবেন মাশরাফির সঙ্গে মোস্তাফিজ। এছাড়া তেমন কোনো প্রাপ্তি এই ম্যাচ থেকে সেভাবে ধরা পড়ে না সাধারণ চোখে। তবে অধিনায়কের নজরে এসেছে আরও কিছু, ‘মুশফিক ভালো খেলার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। লিটন নিজের কাজ করে রাখছে। দুজনই সেঞ্চুরি করলে ভালো লাগত। রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) আর কিছু সময় টিকলে হয়তো আমরা ৩০০ করতে পারতাম। তবে খুবই হাই কোয়ালিটি বোলিং খেলেছি আমরা, যে প্র্যাকটিস খুব কাজে দেবে।’