আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

প্রহসন বলছেন পদবঞ্চিতরা

ছাত্রলীগের বিতর্কিত ১৯ নেতার পদ শূন্য ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
| শেষ পাতা

সদ্যঘোষিত ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে ১৯ ‘বিতর্কিত’ নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই ১৯ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাদ পড়া ১৯ জনের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশ এ বিষয়টিকে ‘প্রহসন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ১৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করা হলো। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাইপূর্বক পদগুলো পূরণ করা হবে।

এর আগে রোববার রাত ১টা থেকে দ্বিতীয় দফায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশের সদস্যরা। বুধবারও তারা অবস্থানে ছিলেন। এদিকে, যাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে, নাম প্রকাশ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতারা। একে নতুন একটি ‘প্রহসন’ আখ্যা দিয়েছেন তারা। পদবঞ্চিত অংশের নেতৃত্বে থাকা ছাত্রলীগের গেল কমিটির প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু বলেন, যাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হলো, তা জানানো হয়নি। আমাদের সঙ্গে যে প্রহসনগুলো এত দিন করা হয়েছে, এটি তারই ধারাবাহিকতা।
নাম গোপন করে অন্যদের বিতর্কিত করা হয়েছে : বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ১৯ জনের পদ শূন্য ঘোষণা করা হলেও তাদের নাম প্রকাশ না করায় কমিটির অন্যদের বিতর্কিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পদবঞ্চিতরা। তারা বলেন, নাম না জানানোর কারণে এখন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ব্যতীত বাকি ২৯৯ জনের মধ্যে কারা বিতর্কিত তা নিয়ে বিতর্কিত হচ্ছে। বুধবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গত কমিটির প্রচার সম্পাদক সাইফ বাবু। তিনি বলেন, আন্দোলনের মুখে ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রথমে ১৭ জনের কথা স্বীকার করলেও ১৪ দিন পর গতকাল রাতে ১৯ জনের পদ শূন্য করার কথা উল্লেখ করে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। তাদের এ পদক্ষেপ আজ প্রমাণ করল, আমাদের দাবি ও আন্দোলন গুরুত্বহীন ছিল না। ১৯টি পদ শূন্য হলেও এখনও যে যার মতো স্বপদে বহাল আছে। এটা সুপরিকল্পিত নয়, অপরাজনীতি, চাতুরি। এগুলো অনেক হয়েছে, অনেক সহ্য করেছি। তিনি অবিলম্বে শূন্য হওয়া ১৯ জনের নাম ও পদের বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি জানান। একই সঙ্গে তাদের সব দাবি মেনে কমিটি পুনর্গঠন না করা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর বিষয়ক উপসম্পাদক শেখ নকিবুল ইসলাম সুমন বলেন, শুধু ১৯ জন নয় কমিটিতে থাকা বাকি বিতর্কিতদেরও বহিষ্কার করতে হবে। তারা ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কোনো ধরনের আকাম করবে, সেটা আমরা মেনে নেব না। রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার বলেন, বিতর্কিদের তালিকা অনেক বড়। মাত্র ১৯ জনের পদ শূন্য করে প্রহসন করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শূন্য করা ১৯ জনের নাম প্রকাশ করার আহ্বান জানান তিনি। আন্দোলনকারীরা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ কামনা করেন।