মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অভিযোগ গঠন হতে পারে ৩০ জুলাই। বুধবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের জন্য এ দিন ধার্য করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সোবহান তরফদার ও অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তদন্ত শুরু করা হয়। আসামি ওয়াহিদুল হক তদন্তকালে বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিলেন। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে গ্রেপ্তারের আদেশ চেয়ে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল এ আবেদন মঞ্জুর করে তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানার ভিত্তিতে ওইদিন দুপুরে রাজধানীর বারিধারার ব্লক-জে, রোড-২/ডি এর ৩ নম্বর বাড়ি থেকে ওয়াহিদুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পর দিন ১১টার দিকে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সেই থেকে ওয়াহিদুল হক কারাগারে আছেন। এদিকে মামলার তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রতিবেদনে ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে স্বাধীনতাকামী মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, গণহত্যা ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়াসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ আনা হয়। মামলায় মোট ৫৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ আনুমানিক বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন ওয়াহিদুল হক রংপুর ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২৯ ক্যাভেলরি রেজিমেন্টের অ্যাডজুুটেন্টের দায়িত্বে থেকে ৪টি সামরিক জিপে মেশিনগান লাগিয়ে গুলিবর্ষণ করে এবং রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় ৫০০ থেকে ৬০০ স্বাধীনতাকামী বাঙালিকে হত্যা, গণহত্যা ও অসংখ্য মানুষকে গুরুতর আহত করে। আশপাশের এলাকার বাড়িঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হত্যা, গণহত্যার শিকার মানুষের লাশ পেট্রল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে কয়েকটি গর্তে মাটিচাপা দেয়। পরে এই অভিযোগপত্র প্রসিকিউশনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়।