আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩০-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

জাহান্নাম থেকে মুক্তি, জান্নাতের প্রার্থনা

আলী হাসান তৈয়ব
| প্রথম পাতা

 

বিশ্বাসী মানুষ মাত্রেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি চান, প্রার্থনা করেন জান্নাতপ্রাপ্তির। রমজানে জাহান্নামের দরজা বন্ধ রাখা হয়, খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের দরজা। হাদিস শরিফে উদ্ধৃত করা হয়েছে, রমজানে জান্নাতপ্রাপ্তি ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করতে। এ সংক্রান্ত একটি চমৎকার দোয়াও রয়েছে। আমরা সেটি মুখস্থ করব এবং রমজানের দোয়া কবুলের সময়ে বেশি বেশি পড়ব। দোয়াটি হলো, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউজুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান নারি।’ অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। আল্লাহ কোরআন মাজিদে জাহান্নামের আগুন সম্পর্কে ভয় দেখিয়েছেন এবং আমাদের বিভিন্ন ধরনের আজাবের খবর দিয়েছেন, যা শুনলে অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে; জান ফেটে যাওয়ার উপক্রম হয়। তিনি করুণাময় বলেই আমাদের বিভিন্ন ধরনের ভয় দেখিয়ে সতর্ক করেছেন; যাতে আমরা ভালোভাবে সাবধান ও ভীত হতে পারি। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা স্বীয় রবের অভিমুখী হও এবং তার আজ্ঞাবহ ও অনুগত হও তোমাদের কাছে আজাব আসার আগে। এরপর তোমাদের সাহায্য করা হবে 

না।’ (সূরা জুমার : ৫৪)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘তোমরা ওই আগুনকে ভয় কর, যা কাফেরদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ (সূরা আলে ইমরান : ৩১)। আল্লাহ শয়তানকে লক্ষ্য করে বলেছেন, ‘নিশ্চয় আমার বান্দাদের ওপর তোমার কোনো ক্ষমতা নেই, তবে পথভ্রষ্টরা ছাড়া যারা তোমাকে অনুসরণ করেছে। আর নিশ্চয় জাহান্নাম তাদের সবার প্রতিশ্রুত স্থান। তার সাতটি দরজা রয়েছে। প্রতিটি দরজার জন্য রয়েছে তাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি শ্রেণি।’ (সূরা আল হিজর : ৪২-৪৪)। 
আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের ময়দানে দুনিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ধনাঢ্য ও সুখী ব্যক্তিকে আনা হবে, অতঃপর তাকে জাহান্নামে অল্প সময় ঢুকিয়ে এনে জিজ্ঞাসা করা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও দুনিয়াতে সুখশান্তিতে ছিলে? তুমি কি কখনও দুনিয়ার নেয়ামত পেয়েছিলে? সে বলবে, না-আল্লাহর কসম! হে আমার রব! আমি কখনও দুনিয়াতে শান্তি পাইনি। ঠিক তদ্রƒপ দুনিয়ায় যে ব্যক্তি সর্বাধিক কষ্টকর ও অশান্তিতে ছিল, তাকে অল্প সময়ের জন্য জান্নাতে ঢুকিয়ে নিয়ে আসা হবে, অতঃপর তাকে বলা হবে, হে আদম সন্তান! তুমি কি কখনও অভাব-অনটনে ছিলে? সে আল্লাহর কসম করে বলবে, না, আমি কখনও কোনো অভাব-অনটনে বা কষ্টে ছিলাম না।’ (মুসলিম : ২৮০৭)। অর্থাৎ জাহান্নামি ব্যক্তি দুনিয়ার সব শান্তি ও নেয়ামতের কথা ভুলে যাবে। আর জান্নাতি ব্যক্তি দুনিয়ার সব কষ্টক্লেশের কথা ভুলে যাবে। অন্য হাদিসে রয়েছে, আনাস ইবন মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের ময়দানে এক জাহান্নামি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি দুনিয়ার সব সম্পদের মালিক হলে কি তা প্রাণের ফিদয়াস্বরূপ খরচ করতে? সে বলবে, হে আমার রব! আমি তা করতাম। তখন আল্লাহ বলবেন, হে আমার বান্দা! আমি তোমাকে তার চেয়েও সহজ হুকুম দিয়েছিলাম, যখন আমি তোমাকে আদম (আ.) এর পিঠ থেকে বের করেছিলাম। তখন বলেছিলাম তুমি আমার সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না। কিন্তু তুমি আমার কথা অমান্য করে আমার সঙ্গে অন্যকে শরিক করেছিলে।’ (বোখারি : ৩৩৩৪)। 
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জাহান্নামের আজাব থেকে বাঁচান। আমাদের চিরস্থায়ী অপমান ও ধ্বংস থেকে বাঁচান।