মাউরিসিও সারি আবেগ লুকাতে জানেন না, চেষ্টাও করেন না! ফাইনালের আগের দিনও খেলোয়াড়দের ওপর রাগ করে আগেভাগে অনুশীলন ছেড়েছিলেন। কারাবাও কাপের ফাইনালে কেপার সঙ্গে তার তর্ক তো কুখ্যাত ইতিহাস। সারি যত যাই করুন, চেলসি সমর্থকরা এরপর আর তার ওপর রাগ পুষে রাখবেন না। ইউরোপা লিগের ফাইনালকে একপেশে বানিয়ে আর্সেনালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে, ৬ বছর পর শিরোপা ঘরে তুলেছে চেলসি। সেটা সারির ক্যারিয়ারেরও প্রথম বড় শিরোপা।
ফাইনাল অবশ্য জেতা দরকার ছিল বেশি আর্সেনালের। উনাই এমেরি টানা তিন মৌসুম এই টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন শিরোপা জিতে। কিন্তু কাজের সময় খেই হারালেন তিনি। আর্সেনালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে হলে জিততে হতো ইউরোপা। তাই পরের মৌসুমেও ইউরোপের সবচেয়ে বড় ক্লাব টুর্নামেন্টে দর্শক হয়ে থাকতে হচ্ছে আর্সেনালকে।
বাকুর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচটা এতখানি একপেশে হবে বোঝা যায়নি প্রথমার্ধ শেষেও; দুই দল শুরু করেছিল ধীরস্থিরভাবে। তবে আস্তে আস্তে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করে আর্সেনাল।
বাকুতে ফাইনাল হওয়া নিয়ে এমনিতে সমালোচনা ছিল। তারওপর এমন ফাইনাল ম্যাচেও গ্যালারির ফাঁকা সিট দৃষ্টিকটু লাগছিল শুরু থেকে। সেটা যেন ছাড়িয়ে ম্যাড়মেড়ে ফুটবলময় প্রথমার্ধটাও। দ্বিতীয়ার্ধে বদলে গেল সব কিছু, আসলে চেলসি। জোড়া গোল করেন এডেন হ্যাজার্ড, একটা করে জিরুদ ও পেদ্রো রদ্রিগেজ। এতদিন ইউরোপায় সর্বোচ্চ গোলদাতার আসন লুকা ইয়োভিচের সঙ্গে ভাগাভাগি করে আসছিলেন জিরু, ফাইনালে নিজের করে নিলেন। গত বছর দলবদলে আর্সেনাল ছাড়তে চাননি জিরু, বাধ্য হয়েই চেলসিতে যোগ দেন। ফাইনাল হলেও প্রিয় ক্লাবের বিপক্ষে যতখানি সম্ভব উদযাপন কমিয়ে আনেন তিনি!
কিন্তু চেলসির উদযাপন থামেনি, বরং বেড়েছে। মোট ৮ ফাইনালে গোল করলেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড পেদ্রো। চেলসির জার্সিতে এটা হতে পারে হ্যাজার্ডের শেষ ম্যাচ। বেলজিয়ানের ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জন প্রতিদিন বাড়ছে নতুন করে। সেটা যদি হয়েই থাকে চেলসি থেকে বিদায়টা মন্দ হলো না হ্যাজার্ডের! ৩ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর দারুণ এক গোল করে বদলি অ্যালেক্স ইওবি প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন দেখান আর্সেনালকে। কিন্তু গোল সান্ত¡নাও জোগাতে পারেনি এমেরির দলকে।
ভালো-মন্দ মিলিয়ে চলা চেলসির মৌসুমটা শেষ হলো আড়ম্বরে। ইউরোপা লিগে ১৫ ম্যাচে হারেনি সারির দল। ২০০৭-০৮ মৌসুমে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর প্রথম কোনো দল ইউরোপিয়ান শিরোপা জিতল অপরাজিত থেকে।