ঈদের কেনাকাটায় তরুণীদের পছন্দে রয়েছে দেশীয় সুতি পোশাকও। ছবিটি রাজধানীর শাহবাগ এলাকার আজিজ সুপার মার্কেট থেকে বৃহস্পতিবার তোলা ষ আলোকিত বাংলাদেশ
বর্তমানে ফ্যাশন সচেতন তরুণীদের প্রথম পচ্ছন্দ দেশীয় সুতি পোশাক। এছাড়া আবহাওয়া প্রচ- গরম হওয়াতে সুতির কাপড় ও হালকা রঙের জয়জয়কার। তাই ঈদে তারা দ্বারস্থ হন দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোতে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ডিজাইন ও কাটিং দেশের বাইরের বাজারও ধরে ফেলেছে। সেজন্য বিভিন্ন দেশ এমনকি ফ্যাশনের বিদ্যাপীঠ ফ্রান্সেও বাংলাদেশের পোশাকের ফ্যাশন শো হয়।
এবার ঈদে সুতি ছাড়াও লিনেন, মসলিন, হাফ সিল্ক, এন্ডি কটন, ভয়েল কাপড়ের পোশাক ভালো চলছে। রঙের মধ্যে সাদা, হালকা গোলাপি, অফ হোয়াইট, বিস্কুট, কফি কালার পচ্ছন্দের তালিকায়।
ফ্যাশন হাউস রং এনেছে তিনটি থিমের ডিজাইন। ইসলামিক নকশা, ফ্লোরাল ও ইন্ডিয়ান টেক্সটাইলÑ এ তিনটি থিমে পোশাকের বাহার স্টাইলিস্টদের নজর কেড়েছে। সারা ফ্যাশন হাউস সুতির ওপর দক্ষিণ এশিয়ান মোটিফ প্রিন্ট, হাতে এক্সক্লুসিভ কাজকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। মোহাম্মদপুরের আদাবর থানাসংলগ্ন হীরা টাওয়ারের মেগা স্টোরে লারিভে ভেজিটেবল ডাই, কাঁথা স্টিচের মেয়েদের পোশাক পাঞ্জাবির কাটতি ভালো। ফ্যাশন হাউস নগরদোলায় কমলা ও হলুদের প্রাধান্য বেশি। এসব পোশাকে ব্লক, সুতির কাজে দেশীয় ডিজাইনের চমক মন কেড়েছে তরুণীদের।
বসুন্ধরার দেশি দশের নগরদোলায় এসেছে গুলশানের পিউ ও নাজিম। ওরা নগরদোলা থেকে তিনটি থ্রি পিস কিনল। তারা জানান, এখানকার ডিজাইনে ফি বছরই নতুনত্ব থাকে।
ফ্যাশন হাউস অঞ্জনে নীল ও ছাই রঙের সম্ভার। সেই সঙ্গে নিপুণ ও ফড়িংয়ের বিক্রয় কর্মীরাও জানান, এবার যেহেতু প্রচ- গরম, তাই গরম ঠেকাতে সুতির কাপড় ও হালকা রঙের জয়জয়কার।
ধানমন্ডির শরদিন্দুতে মুঘল স্থাপত্যের বিভিন্ন দিক, মুঘল মিনিয়েচার, পেন্টিং, মুঘল স্থাপনা পোশাকে বেশ দৃঢ়ভাবেই বিস্তৃতি লাভ করেছে। শরদিন্দুর ডিজাইনার ও অন্যতম স্বত্বাধিকারী হাবীবা জানান, বাংলাদেশের ডিজাইন এখন অনেক দেশের মডেলরাই পচ্ছন্দ করছে।
আরাম বাংলাদেশের পোশাকে বাংলার লোকজ শিল্প, মোরগ লড়াই, গ্রাম্য রমণীর অবসর যাপন ও বেদেনির সাপ খেলার ছাপ ভালো বাজার পেয়েছে। প্রধান কর্মকর্তা নিশাত আনজুম জানান, তিনি পোশাক বানানোর সময় স্বাচ্ছন্দ্যবোধের দিকেই নজর দিয়েছেন বেশি। পারিবারিক আড্ডায়ও যেন পোশাকের আরামটা টের পাওয়া যায়, তা-ও মাথায় রেখেছেন।
আজিজ মার্কেটের ফ্যাশন হাউস ‘বৃত্ত’ সবসময়ই তাদের নিজস্ব টি-শার্টের জন্য জনপ্রিয়। তাদের এবার ঈদ কালেকশনে পোলো টি-শার্টের পাশাপাশি গোল গলার টি-শার্টও দেখা গেছে। এ টি-শার্টগুলোর মধ্যে তরুণদের পচ্ছন্দের কবিতার লাইন কিংবা কবি-সাহিত্যিকদের প্রতিকৃতি রয়েছে। ফ্যাশন হাউস কারখানার এবার ঈদের অন্যতম আর্কষণ হলো কাবলি পাঞ্জাবি। এক রঙের কাবলি পাঞ্জবির প্রতি তরুণদের ঝোঁক বেশি। এখানে এক রঙের কাজুয়াল শার্ট রয়েছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে কাতুয়া। এ মার্কেটের সাতকাহনে ভিড় করে সালোয়ার-কামিজ কিনতে দেখা গেল ক্রেতাদের। বিক্রয়কর্মী রুবেল জানান, গত বছরের তুলনায় এবার কেনাকাটা কম। কারণ হিসেবে বললেন, ক্রেতাদের অনলাইন শপিংয়ের ওপর আসক্তি। দেশীয়া নামের দোকানে এক রঙের ওড়নার আধিপত্য বেশি। ধানমন্ডির লা রিভের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার জামাল হোসেন জানান, এবার বিকিকিনি ভালো। পোশাকের থিম তথ্য বহুল। আড়ংয়ে দেদারসে বিক্রি হচ্ছে চৌকো ডিজাইনের শাড়ি ও গাঢ় নীলের পা ছোঁয়া গাউন। ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মিতা বিক্রিতে খুব খুশি।