যশোরের চিত্র
যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারের সমস্যার শেষ নেই। জনবল, যন্ত্রাংশ ও অবকাঠামো সংকটে ধুঁকছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ফলে চাহিদা থাকলেও স্থানীয় খামারিদের প্রয়োজনীয় হাঁস-মুরগির বাচ্চা সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে সম্ভাবনাময় খামারটি। খামার সূত্র মতে, যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য তৎকালীন পাকিস্তান আমলে যশোর শহরের শংকরপুর রেলগেটের পাশে ৯ একর জমির ওপর নির্মিত হয় সরকারি হাঁস-মুরগি খামার। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের খামারিদের উন্নত জাতের বাচ্চা সরবরাহ করাও ছিল এর অন্যতম লক্ষ্য। তবে সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে খামারটি তার ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। খামার নির্মাণের পরিসর অনুযায়ী মোট পদের সংখ্যা ১৮। সব মিলিয়ে বর্তমানে এখানে ১০ জন কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে খামারের ৩টি পোলট্রি ও ফিডম্যানসহ আটটি পদ খালি রয়েছে। ২২টা শেডের মধ্যে ছয়টি পরিত্যক্ত হলেও বাকিগুলো দক্ষ কর্মী ও জনবল সংকটের কারণে নিয়মিত হাঁস-মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে পারছে না। সরেজমিন দেখা গেছে, খামারটির চারটি শেডে মুরগি রয়েছে। ভেঙে গেছে খামারটির সীমানা প্রাচীর। অধিকাংশ শেড খালি পড়ে রয়েছে। দুটি শেডে সোনালি ও ফাউমি মুরগি এবং অন্যটিতে মিশ্রজাতের ৩ হাজার মুরগি পালন করা হচ্ছে। জনবল সংকটে শেডগুলোতে এগুলোর পরিচর্যা করতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মচারীরা। কয়েকজন কর্মচারী জানান, এক সময় শেডেই বিভিন্ন বয়সি হোয়াইট লেগ হর্ন, ফাওমি ও সোনালি জাতের মুরগি পালন করা হতো। ডিম বিক্রি করা হতো সাধারণ মানুষের কাছে। কিন্তু নানা সংকটে খামারটির দশা এখন বেহাল। উন্নত ডিম ফোটানোর মেশিন না থাকায় খামারে পর্যাপ্ত বাচ্চা ফোটানো যায় না। ব্রুডার হাউস পড়ে আছে অকেজো অবস্থায়। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা অপ্রতুল। এতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণসহ নানা বিষয়ে ঝুঁকি পোহাতে হয় কর্মচারীদের। এ কারণে বাচ্চাগুলোর বৃদ্ধিও সঠিকভাবে হয় না। এ বিষয়ে যশোর হাঁস-মুরগি খামারের সহকারী পরিচালক এনামুল হক বলেন, বর্তমানে যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামার নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে। প্রতিটি শেডের মেঝেতে মাটি দিতে হবে। বেলজিয়াম থেকে আনা দুটি সিটার ও একটি হ্যাচার মেশিন দিয়ে খামারে কাজ চলছে। ভবনগুলোর অবস্থা বেহাল। পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে অফিসের কার্যাবলিতে ব্যাঘাত ঘটছে। খামারটিতে ১ জন মাত্র নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। সীমানা প্রাচীর ভাঙা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না থাকায় প্রায়ই মুরগি চুরি হয়ে যায়। অন্যদিকে জনবল সংকটসহ শেড পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে এ জেলায় খামারিদের চাহিদা মতো হাঁস-মুরগির বাচ্চা সরবরাহ করতে পারছি না। এসব সমস্যার বিষয় লিখিত আকারে অনেকবার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সমস্যাগুলোর সমাধান হলে জেলার এ খামারটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় হাঁস-মুরগির বাচ্চা সরবরাহ করতে পারব বলে আমি আশাবাদী।