আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৩১-০৫-২০১৯ তারিখে পত্রিকা

জান্নাত লাভের এখনই সময়

আবদুস সাত্তার আইনী
| প্রথম পাতা

রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে যে বান্দাই ক্ষমা চায় ক্ষমা পায়; তিনি বান্দার তওবা কবুল করেন এবং পাপরাশি মার্জনা করেন। আল্লাহ তায়ালা কোরআনের অসংখ্য আয়াতে ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “তোমাদের যা নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা গুরুতর তা থেকে বিরত থাকলে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো মোচন করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে দাখিল করব।” (সূরা নিসা : আয়াত ৩১)। এই আয়াতে ছোট ছোট পাপ মার্জনা করার কথা রয়েছে। কিন্তু বড় কোনো পাপ করার পর অনুতপ্ত হলে এবং এমন কাজের পুনরাবৃত্তি না করার অঙ্গীকার করে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা তা ক্ষমা করে দেন। অন্য একটি আয়াতে তিনি শিরক ব্যতীত সব ধরনের পাপ ক্ষমা করার কথা বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করাকে ক্ষমা করেন না। এটা ছাড়া সবকিছু যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আর কেউ আল্লাহর সঙ্গে শরিক করলে সে ভয়ঙ্করভাবে পথভ্রষ্ট হয়।’ (সূরা নিসা : আয়াত ১১৬) যে পাপে মানুষের অধিকার ক্ষুণœ হয় বা বিনষ্ট হয় সেই ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তাকে সন্তুষ্ট করতে হবে। ব্যক্তি মানুষের অধিকার দুই ধরনের : ১. দৃশ্যমান এবং ২. দৃশ্যমান নয়। কাউকে গালিগালাজ করলে বা অপমান করলে যে অধিকার ক্ষুণœ হয় তা চোখে দেখা যায় না। কিন্তু টাকা-পয়সা ও অর্থসম্পদের 

ক্ষতিগুলো দৃশ্যমান। মানুষের অধিকারের ক্ষেত্রে অপরাধ ও পাপ হয়ে গেলে ওই ব্যক্তি থেকে ক্ষমা চাইতে হবে, তার অধিকার আদায় করতে হবে, তারপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এই ক্ষেত্রে কেবল আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। কোরআন মাজিদে রয়েছে, ‘ইউসুফের ভাইয়েরা বললো, আল্লাহর শপথ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাকে আমাদের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা তো অপরাধী ছিলাম। তিনি বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন, তিনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (সূরা ইউসুফ : আয়াত ৯১-৯২)। এখানে ইউসুফ (আ.) আগে নিজের ক্ষমা করার কথা বলেছেন, তারপর আল্লাহর ক্ষমা করার কথা উল্লেখ করেছেন।
রমজান হলো আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি লাভের মাস। এর জন্য আমাদের যা কিছু করা দরকার তা করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশা নিয়ে রাত্রি জাগরণ করে নামাজ পড়বে আল্লাহ তায়ালা তার পূর্ববর্তী সব গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।’ (সহিহ বোখারি, হাদিস নং ৩৭)। অন্য একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের আশা নিয়ে রমজানের রোজাগুলো রাখবে, আল্লাহ তায়ালা তার পেছনের সব গোনাহ মাফ করে দেবেন।’ (সহিহ বোখারি, হাদিস নং-৩৮)। রমজান মাসে ক্ষমা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি অনেক, শুধু অনুতপ্ত হতে হবে এবং প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, আমাদের দ্বারা কখনও পাপকর্ম সাধিত হবে না। সহিহ মুসলিমের একটি হাদিস রয়েছে, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে আরেক জুমা এবং এক রমজান থেকে আরেক রমজান মধ্যবর্তী পাপগুলোর মার্জনাকারী, যদি কবিরা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা যায়।’ (হাদিস নং ৫৭৪)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের মার্জনা লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। আমাদের অবশ্যই মার্জনা লাভ করতে হবে এবং জান্নাত লাভের উপযুক্ত হতে হবে; রমজান মাসই এর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।