বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন ম্যাচ দিয়ে বুধবার শুরু হয়েছে ষষ্ঠ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। অন্য গ্রুপের ম্যাচে গতকাল মুখোমুখি হয়েছে দুই আফ্রিকান দেশ বুরুন্ডি ও মরিশাস। ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল সিশেলস ঢাকা এসেছে আফ্রিকান ডার্বি শুরু হওয়ার আড়াই ঘন্টা আগে! হোটেলে মধ্যাহ্ন ভোজ সারতে সারতেই ৯ ঘণ্টা বিমান ভ্রমণ ক্লান্তি কাটান খুদে এ দেশটির ফুটবলাররা; ৪টা নাগাদ বাফুফে অ্যাস্ট্রো টার্ফে অনুশীলনে নেমে পড়েন তারাÑ এ পর্যন্ত পড়ার পর মনে হবে তাদের চেয়ে বেশি পেশাদার ফুটবল দল বুঝি আর আসেনি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ষষ্ঠ আসরে! ২০০৬ সালে বিশ্ব ফুটবলের র্যাঙ্কিংয়ে ১০৬ নম্বরের দল ছিল ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র সিশেলস; সময়স্রোতে ২০০ নম্বরে। ১৯৭৯ সালে মালদ্বীপের বিপক্ষে ৯-০ গোলের জয়টা তাদের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয়; বড় হার লিবিয়ার কাছে, ১-৯। ব্রিটিশ কলোনি থেকে মুক্ত হয়েছে ১৯৭৬ সালে। জনসংখ্যা ১ লাখেরও কম! জনপ্রিয় খেলা বাস্কেটবল; ২০১৫ সালে আফ্রিকান গেমসের চূড়ান্ত পর্বে খেলা সিশেলসের ক্রীড়া ইতিহাসে নাকি সর্বোচ্চ অর্জন। তবে ২০১১ সালে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রীয় গেমসে মরিশাসকে টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল সিশেলস। শেষ ১২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে হার ১০টি, ড্র দুটি; একটি আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ২০১৮ সালের অক্টোবরে! ঢাকায় এসেই অনুশীলনে নেমে পড়লেও এমন দেশে কি পেশাদার ফুটবল চর্চা হতে পারে? হয়ও না; প্রিমিয়ার, দ্বিতীয় বিভাগ ও তৃতীয় বিভাগÑ তিনটি লিগ হলেও কেউ পেশাদার ফুটবলার না। শীর্ষ লিগে ১২টি দল খেললেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগে অংশ নেয় ১০টি করে দল। ফুটবলারদের পারিশ্রমিক ম্যাচ প্রতি, ৫০ থেকে ১০০ ডলার। তবে প্রিমিয়ার লিগে বিদেশি কোটায় মাদাগাস্কার, নাইজেরিয়া, সুদান থেকে কিছু ফুটবলার আসেন, তারা প্রতি মাসে ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার পারিশ্রমিক পানÑ অনুশীলন চলাকালে জানান সিশেলস ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ডলর আর্নেস্ট। অপেশাদার হলেও ফুটবলের সব কিছুতে পেশাদারিত্বের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সিশেলস ফুটবল ফেডারেশন; সেটা দেখালেন ম্যানেজার, অনুশীলন ভিডিও করার অনুমতি চাইলে বলেন, ‘দেয়া যাবে না।; কেন’র জবাব দিলেনÑ ‘তুমি ভিডিওটা বুরুন্ডির কাছে বিক্রি করে দেবে!’