প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে করে সংসার গড়তে চেয়েছিলেন। দুই মাসের মাথায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার তাদের সব স্বপ্নকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে বিদ্যুৎপৃষ্টে সেই নবদম্পতির মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হওয়ার তিন দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। স্বামী ও স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদে দুই পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তারা নানা ধরনের বিলাপ করে কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন। তারা হলেন ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার গোপপুর এলাকার আবুল কালামের ছেলে মাহাবুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রুনিয়া আক্তার খাদিজা। তারা ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার মিজানুর রহমানের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তারা দুইজনই বিসিক শিল্পনগরীর একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।
সোমবার দুপুরে ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকার ওহাব সরদারের বিল্ডিংয়ের ছাদে কাপড় শুকাতে যান রুনিয়া আক্তার খাদিজা। ছাদে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ওই বিল্ডিংয়ের ওপর দিয়ে যাওয়া ১ লাখ ৩৩ হাজার ভোল্টের বৈদ্যুতিক তার চুম্বকের মতো তাকে টেনে নেয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার শরীর জ্বলসে যায়। এ সময় রুনিয়ার শরীরের জামায় আগুন ধরে যায় এবং ওই আগুন নিচে পড়ে দুটি ঘর আগুনে পুড়ে যায়। চিৎকার শুনে রুনিয়ার স্বামী মাহাবুল ইসলাম তাকে বাঁচাতে দ্রুত ছাদে উঠেন এবং তাকে কোলে করে নিচে নামার সময় তিনিও বিদ্যুৎপৃষ্ট হন। স্বামী-স্ত্রী দুইজনই দগ্ধ হয়ে ছাদে পড়ে থাকলে ফতুল্লার বিসিক ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করান।
মাহাবুল ইসলামের মামা আলিম উদ্দিন নবদম্পতির মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তার
ভাগিনা মাহাবুল ইসলাম বিসিকের একটি গার্মেন্টে চাকরি করতেন। রুনিয়া আক্তারও একই এলাকার একটি গার্মেন্টে চাকরি করতেন। সেই সুবাধে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দুই মাসে আগে বাবা-মায়ের অজ্ঞাতে তারা বিয়ে করে সংসার বাঁধেন। তারা শাসনগাঁও এলাকার মিজানুর রহমানের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। তাদের বিয়ে প্রাথমিকভাবে পরিবার মেনে না নিলেও পরে মেনে নেয়; কিন্তু বিয়ের দুই মাসের মাথায় বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে স্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হন তারা। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে মাহাবুল ইসলাম ও সকাল ৬টার দিকে রুনিয়া আক্তার মারা যান।