গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের একমাত্র ছেলে কিশোর আশিকুর রহমান সাম্য (১৪) হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহ¯পতিবার গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দীলিপ কুমার ভৌমিক ১১ আসামির উপস্থিতিতেই এই রায় ঘোষণা করেন। অন্য আট আসামির মধ্যে একজন পৌর কাউন্সিলর ও দুই মহিলাসহ প্রত্যেককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের গাইবান্ধায় সাম্য হত্যা
আদেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক ও প্রতিহিংসাজনিত কারণে শত্রুতার জের ধরেই মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। রায়ে দণ্ডিত ফাঁসির আসামিরা হলোÑ শাহরিয়ার সরকার হৃদয়, রকিবুল হাসান সজিব ও মাহমুদুল হাসান জাকির। যাদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয়েছে তারা হলোÑ গোবিন্দগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, মাসুদ প্রধান সুজন, আল আমিন ইসলাম, রাবেয়া বেগম, আল আমিন, শিমুল মিয়া, রুনা বেগম ও জাহাঙ্গীর আলম। এ মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে ৬ জানুয়ারি আদালতে সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত তারিখে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর নিখোঁজ হওয়ার পরদিন সকালে গোবিন্দগঞ্জ শহরের বর্ধনকুঠি বটতলা মোড় এলাকার কমিউনিটি সেন্টারের পেছনের একটি সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাম্যর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় পুলিশ জানায়, ঈদের আগের রাতে সুকৌশলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সাম্যকে হত্যা করে ওই সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে রাখে দুষ্কৃতকারীরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওইদিনই পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে। সাম্য গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিল। ওই ঘটনার পর সাম্যর বাবা পৌর মেয়র আতাউর রহমান বাদী হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় ওই খুনের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পৌর কাউন্সিলর জয়নাল আবেদিনসহ ১১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মেয়র আতাউর রহমান সরকার বলেন, তার প্রত্যাশা ছিল তার সন্তান হত্যার সঙ্গে জড়িত সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হবে। কিন্তু মাত্র তিনজনের ফাঁসির আদেশ হওয়ায় তিনি এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলেই উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচারের জন্য আপিল করবেন।
জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, এই রায় পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়। সে জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। আসামির পক্ষের অ্যাড. মিজানুর রহমান বলেন, এ রায়ে আসামিরা ন্যায়বিচার প্রাপ্ত হয়নি। সুতরাং তারা ন্যায়বিচারের জন্য আপিল করবেন।