পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে শিগগিরই লাভজনক সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এছাড়া সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামে (বিডিএফ) সম্মেলনে সোয়া ৪ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।
রোববার শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘সরকারি মালিকানাধীন লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ার পুঁজিবাজারে অফলোড’ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন করে নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ার জেন. লি. (বিআরপিএল), গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) বাজারে শেয়ার ছাড়বে। এছাড়া এরই মধ্যে বাজারে থাকা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশে (পিজিসিবি) শেয়ার সংখ্যা বাড়ানো হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কোম্পানিগুলো টেকসই করতে হবে। প্রথমে প্রত্যেকটা কোম্পানির ব্যালেন্স শিট অ্যাসেস করতে হবে। এখন থেকে ১০ বছর আগের অ্যাসেটের দাম, আর এখনকার দাম এক নয়। এখন কারেন্ট প্রাইসে এগুলো রিভ্যালু করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ রিভ্যালু করতে হবে। সম্পদের পরিমাণ রিভ্যালু করতে দুই মাস সময় লাগবে। এ সময়ের মধ্যে সাতটি কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ অ্যাসেস করা যাবে। যেটা নেট অ্যাসেট দাঁড়াবে সেটার ভিত্তিতেই শেয়ারগুলো ভ্যালুয়েশন হবে। এসব কোম্পানির ১০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার ধীরে ধীরে বাজারে নিয়ে আসা হবে।
মুস্তফা কামাল বলেন, সাতটি কোম্পানি প্রাইভেট সেক্টর থেকে কাজ করতে পারে। আইসিবি (ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ) থেকেও তারা কাজ করতে পারে। তাড়াতাড়ি সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে নিয়ে আসতে আলাদা সাতটি ফার্মকে দিয়ে সম্পদের মূল্যায়ন করা হবে।
কামাল বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। এখানে যারা আছে, তারা বিক্ষিপ্তভাবে আছে। তাই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পুঁজিবাজারে আসতে হবে। পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী ও স্থিতিশীল করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উন্নত দেশের মতো এদেশের পুঁজিবাজারও ব্রডবেজড করতে হবে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিডিএফ সম্মেলনের প্রাপ্তি নিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিডিএফের এবারের সম্মেলনে সোয়া ৪ বিলিয়ন বা ৪২৫ কোটি ডলার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ডলার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আগামী ৪ বছরে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা। এ অর্থ ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে দিবে তারা। এছাড়া বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে দুইটি চলমান প্রকল্পে অতিরিক্ত ও একটি নতুন প্রকল্পে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার অর্থ অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব অর্থ বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি বিডিএফে জাইকা বাড়তি ২ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ২৭০ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। এ ঋণ দিয়ে নতুন ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।