আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৫-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

বদরগঞ্জে পাউবোর ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতা

কৃষিজমি নষ্ট করে খাল খনন

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
| দেশ

রংপুরের বদরগঞ্জে ফসলি জমি কেটে খনন করা খাল ষ আলোকিত বাংলাদেশ

রংপুরের বদরগঞ্জে ফসলি জমি কেটে খাল খননের অভিযোগ উঠেছে। বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউপির দিলালপুর মৌজায় অবস্থিত ২০.২২ মিটার পচানালা খালটি অবস্থিত। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক খালটি ড্রেজিং করার নামে ঠিকাদার খালের গভীরতা না করে এলাকার কৃষকের পৈতৃক সম্পত্তির মাটি কেটে খালের পাড় উঁচু দেখিয়ে এবং জমিতে মাটি ফেলে শত একর জমিকে অনাবাদী করে ফেলছে। এ নিয়ে খাল সংলগ্ন আশপাশের গ্রামের প্রান্তিক কৃষক বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার ‘হামাক সবাকে শ্যাষ করি দিছে বাবা। হারা  এখন কোনটে যামো।’ মোর মাত্র ১৫ শতক ভুঁই আছিলো নালা খাকি খানিক দুরোত। ঠিকাদার নালা ডেসিং (ড্রেজিং) এর নামে মোর পৈতৃক জমির ওপর মাটি ফ্যালে ভুঁই শ্যাষ করি দিছে, এখন মুই ক্যানকা করি ইরি আবাদ করিম। এই ভুঁই কোনায় মোর শেষ সম্বল। কথাগুলো আক্ষেপের সাথে জানালেন উপজেলার রাধানগর ইউপির লালদিঘি আকন্দপাড়া গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ জায়েদুল ইসলাম। 
অপর কৃষক লালদিঘি উত্তরপাড়া গ্রামের আ. মজিদ জানান, খালের নির্ধারিত সীমানা বাদ দিয়ে আমার পৈতৃক ৩৩ শতাংশ জমির মধ্যে ১৬ শতাংশ জমি নষ্ট করে ফেলেছে। লালদিঘি এলাকার অপর কৃষক হারুন অর রশিদ জানান, জমির ক্ষতি করে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ করার অনুরোধ করলে আমাদের কথার কোনো কর্ণপাতই করেনি। উল্টো আমার পৈতৃক ৫০ শতাংশ জমির মধ্যে পাড় কেটে মাটি ফেলে ৩০ শতাংশ জমিই নষ্ট করে ফেলেছে। রাধানগর ইউপির কাঁচিপাড়া গ্রামের অপর প্রান্তিক কৃষক বৃদ্ধ কসরোতুল্লাহ্ মণ্ডল বলেন, ‘ঠিকাদার হামাক সবাকে শ্যাষ করি দিছে। ভুঁই তো নষ্ট করিল তার উপর যদি এই মাটিগুল্যা তাড়াতাড়ি না সারায় তাইলে হারা ইরি আবাদ করমো কেমন করি।’ সরেজমিন উপজেলার রাধানগর ইউপির দিলালপুর মৌজায় পচানালা খালে গিয়ে ঠিকাদারের কাজের অব্যবস্থাপনা ও খালের পাড়ের জমির প্রান্তিক চাষিদের আহাজারির চিত্রই চোখে পড়ে। জানা যায়, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউপির দিলালপুর মৌজায় অবস্থিত ২০.২২ মিটার পচা নালা খাল যা স্থানীয়দের কাছে দো-ধারা নালা নামে পরিচিত। সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পচা নালা খালটি ড্রেজিং করার কাজটি পান ফরহাদ হোসেন নামে এক ঠিকাদার। ঠিকাদার পচা নালা খালের গভীরতা না করে এলাকার কৃষকের পৈতৃক সম্পত্তির মাটি কেটে খালের পাড় উঁচু দেখিয়ে এবং কৃষকের জমিতে মাটি ফেলে শত একর উর্বর আবাদি জমিকে অনাবাদি করে ফেলছে। এ নিয়ে খাল সংলগ্ন আশপাশের গ্রামের প্রান্তিক কৃষকরা বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদার ফরহাদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি।  সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারকে পচানালা খালের ড্রেজিংয়ের কাজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কৃষকের জমি নষ্ট করে কাজ করা এটা অন্যায় ও নিয়মবহির্ভূত কাজ। বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি অফিসার নবীরুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি কৃষকদের জমি হতে মাটি সরিয়ে নিয়ে বিধি মোতাবেক কাজ করতে।