সদ্যসমাপ্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ এবং জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। মতিঝিলে নিজ চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় ড. কামাল হোসেনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মহসীন রশিদ। তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই বছর কারাবাসের প্রতিবাদে ও তার মুক্তির দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রতিবাদ সভা করবে ঐক্যফ্রন্ট। বেলা ১১টায় এ সমাবেশ শুরু হবে। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন।
ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যে বলা হয়, সদ্যসমাপ্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর যুবসমাজ ও জনগণ অনাস্থা প্রকাশ করেছে। নির্বাচিত মেয়ররা মাত্র ৫ থেকে ৭ শতাংশ মানুষের রায় পেয়েছে। বাকি ফল ইভিএমের জালভোট। বর্তমান সরকারের আমলে গণতন্ত্র আইনের শাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। সরকার চায় ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে না যাক। সরকার ভোটারদের ভয় পায়। তাই সরকার নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, যে নির্বাচন হয়েছে তাকে মোটেই নির্বাচন বলা যাবে না। সরকার দায়িত্বহীনভাবে সংবিধানের পরিপন্থি কাজ করছে। নির্বাচনের প্রক্রিয়া পদ্ধতি ধ্বংস করেছে। যার ফলে আজকে দেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা এ কথাগুলো জনগণকে বলতে থাকব, বলার দিক থেকে আমাদের কোনো ধরনের কমতি নেই। আমরা বলতে থাকব, মানুষকে জানাতে থাকব। মানুষ একদিন দাঁড়িয়ে বলবে তারা যে কাজগুলো করছে সেটা সঠিক নয়। তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারকে মানুষ কখনোই গ্রহণ করেনি। এখনও করবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আপনারা সাংবাদিকরা পুরো নির্বাচনে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। জনগণ আমাদের সঙ্গে ছিল না এ ধরনের বক্তব্য সঠিক নয়। আপনাদের ক্যামেরা প্রকাশ করেছে, প্রমাণ হয়েছে জনগণ আমাদের সঙ্গে কীভাবে মাঠে ছিল। পুরান ঢাকাসহ সবখানে মানুষ আমাদের সঙ্গে ছিল।
আ স ম আবদুর রব বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ধৈর্য সহকারে রাজনৈতিক দল দৃঢ়তার সঙ্গে আন্দোলনে নামবে। অস্থির হলে চলবে না। সময় বলে দেবে কখন কি করতে হবে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাই করবে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি। জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য এখন থেকে আমরা রাস্তায় পথে ঘাটে মিটিং-মিছিল সব ধরনের সভা কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নূরুল আমিন বেপারী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তাক আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।