চীনে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২৫ জনে; আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ হাজার। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, সোমবার এক দিনেই এ ভাইরাসে মারা গেছেন ৬৪ জন; নতুন ৩ হাজার ২২৫ জনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৩৮ জনে। গেল বছরের শেষ দিন চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম এ ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ার পর থেকে এক দিনে এত বেশি মৃত্যু ও নতুন রোগীর তথ্য আর আসেনি। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে ফিলিপাইন ও হংকংয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বিশ্বের ২৫টি দেশ এবং অঞ্চলে কমপক্ষে ১৫০ করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে মানুষ থেকে মানুষে নভেল করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতে থাকায় গেল ৩০ জানুয়ারি এ ভাইরাস নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক উপসর্গ হয় ফ্লু বা নিউমোনিয়ার মতো। কিন্তু বয়স্ক এবং অন্য অসুস্থতা থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ সংক্রামক রোগ হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। এর কোনো প্রতিষেধকও মানুষের জানা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও টিকা কেন্দ্রের পরিচালক ন্যান্সি মেসোনিয়ার বলেছেন, সামনের দিনগুলোয় চীনের বাইরে এ ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়ানোর ঘটনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি মানুষের বসবাসÑ এরকম কয়েকটি শহরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে চীন। সাংহাইসহ কয়েকটি শহরে চন্দ্র নববর্ষের ছুটি আরও বাড়ানো হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ রাখা হয়েছে অনেক জায়গায়। অল্প সময়ের মধ্যে বিপুলসংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে চীনে চিকিৎসা সরঞ্জামেরও সংকট তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে পুরো বিশ্বের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনকে একদিকে সংক্রমণ ঠেকাতে পানির মতো টাকা খরচ করতে হচ্ছে; অন্যদিকে বিচ্ছিন্নতার মুখে পড়ায় অর্থনীতির জন্য তৈরি হচ্ছে অশনিসংকেত। আর সেক্ষেত্রে পুরো বিশ্ব অর্থনীতিকেও ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যেতে হবে। বিডিনিউজ