আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৭-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

‘অসৎ উদ্দেশ্যে কোনো আইন করিনি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
| প্রথম পাতা

উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমার বাধ্যবাধকতা তৈরিতে বিলটি (আইন) কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে বা অশুভ কার্যসম্পাদনে পাস করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই এ বিল পাস করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ওভারঅল খারাপ নয় বলেও জানান অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তিনি। বুধবার জাতীয় সংসদে স্বশাসিত সংস্থার উদ্বৃত্ত অর্থ কোষাগারে নিতে বিল পাস হয়। জাতীয় পার্টি ও বিএনপি সদস্যরা এ বিলের বিপক্ষে ভোট দেয়। এর প্রসঙ্গ টেনে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো অসৎ উদ্দেশ্য বা অশুভ কার্যসম্পাদনের জন্য বিলটি পাস করিনি। করেছি সততা নিয়ে, সেটি হচ্ছে একটি ফিন্যান্সিয়াল ডিসিপ্লিনের জন্য। টাকা দেওয়ার সময় সরকার দেবে আর খরচ করার সময় আমি নিজেÑ এটি হওয়া উচিত নয়। সরকারকে অবহিত করে সে কাজ করতে হবে। সেজন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানই যা সরকার থেকে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং তারা নিজেরা নিজেদের ম্যানেজমেন্ট করে তবে তাদের জবাবদিহিতা দরকার। আইনটি যথাযথভাবে করা হয়েছে এবং এটি অর্থনীতিতে ডেফিনেটলি অর্থবহ ভূমিকা পালন করবে।

টাকাটা নিয়ে ভয়টা কেন জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, হয়তো তারা বুঝতে পারেনি, আমি দেখলাম যে সংসদে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ঠিক ছিল তারা মনের আনন্দে কেউ কেউ বলছে আরও যেসব প্রতিষ্ঠান এ আইনের বাইরে রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানকেও এর আওতায় আনতে হবে; কিন্তু পরে আবার তারাই বিরোধিতা শুরু করল।

তিনি বলেন, সরকার ২৫ শতাংশ নিলে বাকি ৭৫ শতাংশ তো তাদের থাকবে। অতিরিক্ত টাকা রেভিনিউ ক্যাপিটাল খরচ বাদ দিয়ে ২৫ শতাংশ রেখে ব্যালেন্সটা রেখে দেবে। এটি হলো একটা জবাবদিহিতার ব্যাপার, টাকার জন্য না টাকার চেয়ে বড় হলো ফিন্যান্সিয়াল ডিসিপ্লিন।

প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকে টাকা রেখেছে, সেই টাকা ট্রেজারিতে নিলে তারল্য সংকট হবে কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকে সারপ্লাস ফান্ড অনেক বেশি, এটি থাকলেও লস। যে পরিমাণ টাকা থাকা উচিত সে পরিমাণ থাকা ভালো। ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ করতে পারে এটি নিয়ম আছে। বিষয়টি হচ্ছে আর্থিক শৃঙ্খলা এ খাতে নিয়ে আসা। এছাড়া বাইরে কোনো উদ্দেশ্য নেই। ব্যাংকগুলোর কাছে সর্বশেষ তথ্যমতে ১ লাখ ১৬ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা অলস টাকা বা সারপ্লাস মানি আছে।

দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের ঘাটতি রয়েছে রপ্তানি বাণিজ্য, ৫ শতাংশের মতো। নেগিটিভ গ্রোথ রয়েছে। বছর শেষে তা থাকবে না। বর্তমানে পৃথিবীতে একটি দেশও নেই যেখানে নেগেটিভ গ্রোথ নেই। সামষ্টিক অর্থনীতি ওভারঅল খারাপ নয়। থাইল্যান্ডে, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নে, ভারতে নেগেটিভ গ্রোথ হয়েছেÑ এটি স্বীকার করতে হবে। এর থেকে বেরিয়ে আসতে কয়েকটি বৈঠক করা হয়েছে এবং সেখান থেকেও বের হয়ে আসব। সামষ্টিক অর্থনীতি ওভারঅল খারাপ নয়।

সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদে যারা বিরোধী দল আছে তাদেরও সমর্থন লাগবে, তাদেরও অবদান আছেÑ কাউকে বাদ দিয়ে নয়। আমি মনে করি, কালকের বিষয় ডিপলি নেবেন না, নেওয়ার দরকার নেই। আমিও ভুলে গেছি। কালকেই আমাকে পেছন থেকে বন্ধু-বান্ধব বলেছে, তুমিও সেখানে যাও। আমি বলেছি, ওদিকে যেতে পারব না, সেই ভাষা আমি শিখিনি। আমরা এটাকে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে দেই।

অর্থমন্ত্রী বলেন, একজন সংসদ সদস্য বলেছেন, আমি ব্যবসায়ী মন্ত্রী। ব্যবসায়ী মন্ত্রী হওয়ার কারণে তার মতে ব্যবসাটা ভালো বুঝি, টাকা-পয়সা হিসাবটা ভালো বুঝি এবং কখন কার থেকে টাকা নিতে হবে সেটাও ভালো বুঝি। এ কথা সঠিক নয়। এ রকমভাবে পারসোনাল লেবেলে না গেলেও পারতেন। একসময় ব্যবসায়ী ছিলাম, ব্যবসা করা তো অপরাধ নয়, ব্যবসা করেছি ১২ বছর আগে।