পুঁজিবাজার শক্তিশালী করতে লাভজনক সরকারি সাত কোম্পানির শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্তে পর এবার নতুন করে তিন সরকারি ব্যাংক পুঁজিবাজারে আনার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। ব্যাংক তিনটি হচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংক। পাশাপাশি বাজারে তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরও ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ধারাবাহিক পতনের মুখে পুঁজিবাজার। সার্বিক বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং দীর্ঘমেয়াদি আস্থা ফেরাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয় সরকার। এরই অংশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় মালিকানার তিন ব্যাংকের শেয়ার বিক্রির এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক সোনালী, জনতা ও অগ্রণীকে বাজারে আনার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করতে আজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে সরকারি সোনালী, জনতা ও অগ্রণী ব্যাংকের শেয়ার কীভাবে আনা যায় এবং কত অংশ ছাড়া যেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। একইসঙ্গে অংশীজনসহ বিশেষজ্ঞদের মতামতও নেওয়া হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংকের শেয়ার আরও ছাড়া যায় কিনা, সে বিষয়েও আলোচনা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা বিশ্লেষণ হচ্ছে। ব্যাংকগুলোর আর্থিক বিবরণীসহ সাম্প্রতিক বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেন, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের থাকার কথা রয়েছে।
এর আগে, ২ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে লাভজনক সাতটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে আনার সিদ্ধান্ত নেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ওইদিন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পুঁজিবাজারের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ দরকার। এখানে যারা আছে তারা বিক্ষিপ্তভাবে আছে। লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পুঁজিবাজারে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে সাত প্রতিষ্ঠানকে শিগগিরই বাজারে আনা হবে। বাজার চাঙা করতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল), পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি, ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (ইজিসিবি), আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড, বি-আর পাওয়ারজোন লিমিটেড (বিআরপিএল) এবং গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডকে (জিটিসিএল) বাজারে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে তাদের সম্পদের পরিমাণ যাচাই করা হবে। এর আগে ২০১৪ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারি ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ নেন; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর বাস্তবায়ন হয়নি।