আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৯-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

লাবণ্যময় ত্বকের জন্য

ডা. সাব্বির মুহাম্মাদ শাওকাত
| সুস্থ থাকুন

প্রতিটি মানুষই চায় তার লাবণ্যময়, সুস্থ ও মসৃণ ত্বক। আর ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে হলে প্রয়োজন পরিপূর্ণ ও সঠিক যত্নের। আসুন জেনে নিই ত্বক লাবণ্যময় ও সুস্থ রাখার
কিছু পরামর্শÑ 

 

সূর্যালোক থেকে আগত অতি বেগুনি রশ্মি ‘এ’ এবং ‘বি’ ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। অতি বেগুনি রশ্মি ‘এ’ ত্বকে বিভিন্ন ধরনের এলার্জি তৈরি করে এবং ‘বি’ ত্বক-ক্যান্সার সৃষ্টি করে। ‘এ’ ও ‘বি’ উভয় রশ্মিই ত্বকের মসৃণতা দানকারী ইলাস্টিক তন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে অল্প বয়সেই ত্বকে কুঁচকানো ভাব ও বলিরেখা তৈরি করে এবং মেছতা, তিল, কালো বা বাদামি ছোপ ছোপ দাগ ফেলে। সুতরাং সব বয়সের নারী-পুরুষকে নিম্নলিখিত পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিতÑ

 সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সরাসরি সূর্যালোকের সংস্পর্শ পরিহার করে চলা। 

 উল্লিখিত সময়ে ঘরের বাইরে বের হলে প্রত্যেকের উচিত এসপিএ-১৫ এর অধিক স্বীকৃত উন্নতমানের ‘এ’ ও ‘বি’ উভয় রশ্মিকে প্রতিরোধকারী সানস্ক্রিন ব্যবহার করে চলা।

 যে কোনো মানের সানস্ক্রিন সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা পর্যন্ত আপনার ত্বককে রক্ষা করতে পারবে। তাই দুই ঘণ্টা পর অধিক সময় রোদে থাকলে ফের সানস্ক্রিন শরীরে লাগাতে হবে।

 প্রখর রোদে চলার সময় অবশ্যই ছাতা, মাথার বড় আকারের টুপি ব্যবহার করা উচিত।

 রোদে বের হলে ফুলহাতা মোটা সুতির জামা পরিধান করা।

ধূমাপান, জর্দা, তামাক, সাদাপাতা ত্বকের অন্যতম প্রধান শত্রু। মুখ গহ্বরের ক্যান্সার ছাড়াও এগুলো ত্বকের অল্প বয়সে বুড়িয়ে যেতে, বলিরেখা, ভাঁজ ও দাগ সৃষ্টি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। সুতরাং সব বয়সের সবার উচিত ধূমপান, তামাক, জর্দা পরিহার করে চলা। 

ত্বককে লাবণ্যময়, সুস্থ, সুন্দর, মসৃণ রাখতে পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস খুবই জরুরি। বিভিন্ন ঋতুতে উৎপাদিত বিভন্ন ধরনের দেশি ফলমূল ও শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, মিনারেল ও এন্টিঅক্সিডেন্ট। সাধ্যমতো সবারই উচিত স্বল্পমূল্যে প্রাপ্ত দেশি ফলমূল ও শাকসবজি প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে আহার করা। 

মাছ এবং মাছের তেলে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ত্বকবান্ধব ফ্যাটি এসিড, যা ত্বককে নানা ধরনের ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত রাখে এবং ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষায় সহায়তা করে। তাই গোস্ত অপেক্ষা দেশি প্রজাতির মাছ খাওয়া ত্বকের জন্য উপকারী।

স্নিগ্ধতা ও লাবণ্যের জন্য ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করা অত্যাবশ্যকীয়। বিভিন্ন মানুষের ত্বকের আর্দ্রতা বিভিন্ন রকম হালেও হেমন্ত, শীত ও বসন্তকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় আনুপাতিক হারে শরীরের আর্দ্রতাও হ্রাস পায়। তাই সবার উচিতÑ

 প্রতিদিন অন্তত দুইবার পুরো শরীরে লোশন, তেল, ক্রিম, গ্লিসারিন, ইত্যাদি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করা। 

 মোটা ও শুষ্ক চামড়াযুক্ত স্থান যেমন হাত, পা, ঠোঁটে সাদা পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন প্রয়োগ করা। 

 গোসলের পর শরীরে সামান্য পানির স্তর থাকতে থাকতেই লোশন বা তেলজাতীয় ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করা। 

 হাত, পা, বগল, কুঁচকি ব্যতীত শরীরের অন্য সব স্থানে প্রতিদিন সাবান ব্যবহার না করাই শ্রেয়। সপ্তাহে দুই দিন পুরো শরীরে সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে।

 যাদের শরীরের ত্বক অতি শুষ্ক তাদের উচিত তেল বা গ্লিসারিনযুক্ত সাবান ব্যবহার করা। 

 ২৪ ঘণ্টায় অন্তত দুই থেকে আড়াই লিটার পানি পান করা। 

 যাদের কর্মক্ষেত্রে অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করতে হয়, বার বার হাত ধুতে হয়, তাদের হাতের চামড়ার আর্দ্রতা রক্ষার্থে ভিনাইল, হাতমোজা বা গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।

 

ডা. জেসমিন আক্তার লীনা

সহকারী অধ্যাপক (চর্ম-যৌন-এলার্জি)

সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

চেম্বার: আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা।