কপিজাতীয় সবজিতে থাকা উপাদান যকৃতে চর্বি জমা সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে। ‘ক্রুসিফেরাস’ প্রজাতির সবজি, যেমনÑ বাঁধাকপি, ফুলকপি, ‘কেইল’, ‘ব্রাসেলস স্প্রাউটস’ ইত্যাদিতে থাকা একটি প্রাকৃতিক উপাদান সাহায্য করবে ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ফ্যাটি লিভার সারাতে
ডিজিজ’ এর (এনএএফএলডি) সমস্যা সমাধানেÑ এমনটাই বলছে গবেষণা।
‘হেপাটোলজি’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় বলা হয়, এ প্রজাতির সবজিতে থাকা উপাদানটির নাম ‘ইনডোল’, যা চর্বিযুক্ত যকৃতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়ক নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির পথ প্রদর্শন করবে।
গবেষণার প্রধান গবেষক, যুক্তরাষ্ট্রের ‘টেক্সাস অ্যান্ড এম অ্যাগ্রিলাইফ রিসার্চ’য়ের ‘ফ্যাকাল্টি ফেলো’ চাওডং য়ু বলেন, গবেষণার ভিত্তিতে আমাদের বিশ্বাস, যেসব স্বাস্থ্যকর খাবারে প্রচুর পরিমাণে ‘ইনডোল’ থাকে, সেগুলো ‘এনএএফএলডি’ প্রতিরোধে এবং যাদের এ সমস্যা আছে তাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে যে বিভিন্ন রোগপ্রতিরোধ ও প্রতিষেধন করা যায় এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা যায়, তার আরেকটি উদাহরণ আমাদের এ গবেষণা।
যকৃতের পেশির ভেতরে চর্বি ছড়িয়ে পড়লে ‘এনএএফএলডি’ দেখা দেয়, যার কারণ হতে পারে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টির অভাব, ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’য়ের মাত্রা বেশি হওয়া ইত্যাদি। সঠিক চিকিৎসা করা না হলে এ সমস্যা ডেকে আনতে পারে প্রাণঘাতী যকৃতের রোগ, যেমনÑ ‘সিরোসিস’ কিংবা ‘লিভার ক্যানসার’।
‘এনএএফএলডি’য়ের পেছনে একাধিক কারণ কাজ করে। যাদের এ সমস্যা আছে তাদের জন্য কীরূপ উপকার বয়ে আনতে পারে এ উপাদান, সে ব্যাপারে ধারণা নিতে গবেষণায় মানুষ, পশু ও উভয়ের কোষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে যকৃতের প্রদাহে ‘ইনডোল’য়ের প্রভাব পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর জন্য ১৩৭ চীনা নাগরিকের ওপর গবেষণা চালানো হয়। দেখা যায়, যাদের ‘বডি ম্যাস ইনডেক্স’য়ের মাত্রা বেশি, তাদের রক্তে ‘ইনডোল’য়ের মাত্রা থাকে কম। ‘শরীরের প্রতিটি কোষের ওপর ‘ইনডোল’য়ের প্রভাব নিয়েও কাজ করেন গবেষকরা। যকৃতে কোষের চর্বি কমানোর পাশাপাশি অন্ত্রের কোষকে প্রভাবিত করে এ উপাদান, যা অন্ত্রের প্রদাহ সারাতে সহায়তা করে’, বলেন টেক্সাস অ্যান্ড এম হেলথ সায়েন্স সেন্টারের অধ্যাপক শ্যানন গ্লেসার। তিনি আরও বলেন, এনএএফএলডিয়ের চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত বয়ে আনতে পারে ‘ইনডোল’ তৈরিতে সহায়ক খাবার ও ওষুধ।