আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ৯-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হলো ‘খালেদাকে মুক্তি দিতে বাধ্য করা হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক
| প্রথম পাতা

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন ষ পিবিএ

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে সরকারকে বাধ্য করা হবে। দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে দলীয় প্রধানকে মুক্ত করার প্রত্যয় ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল শনিবার খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে খালেদাকে মুক্তি দিতে
দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন। 
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক জীবনে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন। তার মুক্তির জন্য আমরা সভা-সমাবেশ করেছি, মিছিল করেছি। এখন একটাই কথাÑ খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবই এবং সরকারকে বাধ্য করব খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক কারণে বন্দি রাখা হয়েছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ, নিজে খেতে পারেন না, চলতে পারে না। দুই বছর বিনা দোষে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার ক্ষমতায় রয়েছে জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। এ সরকার জনগণের সরকার নয়। কারণ তাদের জনগণের ম্যান্ডেট নেই। তারা গণতান্ত্রিক চেতনাকে ধ্বংস করেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে। দেশের বিচারব্যবস্থা এখন স্বাধীন নয়। দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করা হয়েছে। একদিন আগে অর্থমন্ত্রী বললেনÑ সবদিক থেকে অর্থনীতি ঊর্ধ্বমুখী। পরের দিন জাতীয় সংসদে বললেন, অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। এরপরও তার মন্ত্রিত্ব থাকে কী করে? তিনি আরও বলেন, রপ্তানি আয় নিচের দিকে, রাজস্ব আয় কমে গেছে কিন্তু দুর্নীতি কমেনি। দুর্নীতির জন্য যুবলীগের প্রেসিডেন্টকে বাদ দিতে হয়েছে, ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্টকে বাদ দিতে হয়েছে। জনগণ এখন আর আওয়ামী লীগকে চায় না। তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, মাত্র ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জনগণের মেয়র হওয়া যায় না। নির্বাচনের ফল বাতিল করে পুনরায় ভোট দিন, জনগণের মেয়র নির্বাচিত করুন। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিন।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। গেল বছরের ১ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে তিনি বন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এবার বিএনপি চেয়ারপারসনের কারাবাসের দুই বছর পূর্ণ হলো।
সমাবেশ শুরু হওয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা আগে থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এসব মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়। সমাবেশ শুরুর আগেই ফকিরাপুল থেকে নয়াপল্টনে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি, নির্বাচন করেছি। এবার খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সভায় বক্তব্য স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ। অসুস্থতার জন্য উপস্থিত থেকেও বক্তব্য দেননি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আরও বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ , মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও নেতাকর্মীরা।