১৯৯৬ সালে বাপ্পারাজ, অমিত হাসান ও শাবনাজ অভিনীত ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমাটি ব্যাপক ব্যবসা সফল হয়েছিল। এ সিনেমার গল্প, তিন তারকার মনোমুগ্ধকর অভিনয় আর গান সে সময় দর্শকের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিল। দেশের আনাচে-কানাচে ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার গান তখন দিনরাত বাজত। সিনেমাটি মুক্তির প্রায় দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও এ সিনেমার গান দর্শকের মুখে মুখে প্রায়ই শোনা যায়। শুধু তাই নয়, বাপ্পারাজ, অমিত হাসান কিংবা শাবনাজকে দর্শক কোথাও পেলে গল্পে গল্পে ‘প্রেমের সমাধি’র কথা উঠেই আসে। সময়ের পরিক্রমায় আজ তাদের তিনজনের অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘প্রেমের সমাধি’ মুক্তির সাফল্যের দুই যুগে পদার্পণ করছে। দুই যুগে পদার্পণের আগেই সম্প্রতি এ তিন তারকা একটি ঘরোয়া আড্ডায় একত্রিত হয়েছিলেন। সে সময়েই তারা তিনজন মোহসীন আহমেদ কাওছারের ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি হন। আর নিজেরই ‘প্রেমের সমাধি’র গল্পে মেতে ওঠেন। শাবনাজ বলেন, ‘ভাবাই যায় না দেখতে দেখতে জীবন থেকে এতটা বছর পেরিয়ে গেছে। প্রেমের সমাধি সিনেমায় অভিনয় করে সে সময় অনেক সাড়া পেয়েছিলাম। অবশ্য এখনও কোথাও প্রেমের সমাধি সিনেমাটি দেখেছেন এমন কারও সঙ্গে দেখা হলে এর গল্প কথা প্রসঙ্গে তুলে ধরেন, তুলে ধরেন আমার অভিনীত হেনা চরিত্রটির কথা। শুনতে বেশ ভালোই লাগে। আমার অভিনয় জীবনের একটি মাইলফলক সিনেমা এটি। দর্শক এখনও যে সিনেমাটির কথা মনে রেখেছেন এটাও আসলে অনেক ভালো লাগার। সহশিল্পী হিসেবে বাপ্পারাজ এবং অমিত হাসান সে সময় আমাকে বেশ সহযোগিতা করেছিলেন। আমরা শুটিংয়ে অনেক মজাও করেছিলাম। পুরোনো সে দিনের কথা ভাবতে আসলে ভালোই লাগে। দর্শকের কাছেও আমরা কৃতজ্ঞ, তারা সে সময় কষ্ট করে হলে গিয়ে সিনেমাটি দেখেছিলেন। তা না হলে তো প্রেমের সমাধি এতটা জনপ্রিয় সিনেমা হয়ে উঠত না।’ সিনেমাটির কাহিনি, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও গীত রচনা করেছিলেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, সংগীত পরিচালনা করেছিলেন আনোয়ার জাহান নান্টু। সিনেমাটি পরিচালনা করেছিলেন ইফতেখার জাহান। ১৬ রিলের ১৪৬৯৪ ফুটের এ সিনেমাটির জনপ্রিয় গানগুলো হচ্ছে ‘জীবনের নৌকা চলে হেলেদুলে’, ‘প্রেমের সমাধি ভেঙে’, ‘তুমি বন্ধু আমার চির সুখে থাকো’। গান গেয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোর, শাকিলা জাফর ও বেবী নাজনীন। এ সিনেমায় অভিনয় করা তিন শিল্পী আনোয়ার হোসেন, দিলদার, অন্তরা এখন প্রয়াত। সিনেমাটিতে আরও অভিনয় করেছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান ও গাঙ্গুয়া। সিনেমাটির নৃত্য পরিচালক ছিলেন আজিজ রেজা এবং ফাইট ডিরেক্টর ছিল আরমান গ্রুপ। সিনেমাটোগ্রাফার ছিলেন জাকির হোসেন। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছিলেন আতাউর রহমান টুনু। ‘প্রেমের সমাধি’র পর তারা তিনজন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘তপস্যা’ সিনেমায়ও অভিনয় করেছিলেন।