করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শুধু রোববারই মারা গেছেন ৯৭ জন। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক দিনে এত মানুষ মৃত্যুর ঘটনা এটিই প্রথম। এ নিয়ে চীনে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৯০৮ জনে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু নতুন করে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। চীনজুড়ে ৪০ হাজার ১৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫১৮ জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। নতুন এ ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাতে চীনে একটি বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। চীনের তথ্যানুযায়ী, ৩ হাজার ২৮১ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে সুস্থ করে তোলার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার চীনে নতুন চন্দ্রবর্ষের ছুটি শেষ করে লাখ লাখ মানুষের কর্মক্ষেত্রে ফেরার কথা। এর আগে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এ ছুটি বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে কাজের সময়ের মধ্যে পরিবর্তন আনাসহ নির্দিষ্ট কিছু কর্মক্ষেত্র খোলা। এ ছুটির সময়ের মধ্যে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২০০৩ সালে সার্স প্রাদুর্ভাবে মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। ওই সময় চীনে সার্স শুরু হওয়ার পর পুরো বিশ্বে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৭৪ জন মারা যান। চীনের মূল ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে একজন জাপানি ও একজন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন, বাকিরা চীনা নাগরিক। মূল ভূখণ্ডের বাইরে এ পর্যন্ত ফিলিপাইন ও হংকংয়ে ভাইরাসে আক্রান্ত দুই চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটি আরও কমপক্ষে ২৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। ৩০ জানুয়ারি প্রাদুর্ভাবটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার শহরটি গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে মূলত অচল হয়ে রয়েছে। এদিকে হংকংয়ে কোয়ারেন্টিন করে রাখা একটি প্রমোদতরিতে যাত্রী এবং ক্রুদের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণের কোনো চিহ্ন না থাকায় তাদের প্রমোদতরি ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর আগের একটি ক্রুজের আট যাত্রীর মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর দ্য ওয়ার্ল্ড ড্রিম নামের ওই প্রমোদতরি পৃথক করে রাখা হয়েছিল। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক উপসর্গ হয় ফ্লু বা নিউমোনিয়ার মতো। কিন্তু বয়স্ক এবং অন্য অসুস্থতা থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ সংক্রামক রোগ হয়ে উঠতে পারে প্রাণঘাতী। এর কোনো টিকা বা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। বিবিসি