রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে টাকার বিনিময়ে খেলা সব ধরনের জুয়া নিষিদ্ধ করেছেন হাইকোর্ট। ঢাকা ক্লাবসহ ১৩টি অভিজাত ক্লাবে জুয়া খেলা বন্ধের দাবিতে করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেন। একই সঙ্গে জুয়া খেলা বন্ধে এ সংক্রান্ত আইনে সংশোধনী এনে সাজা বৃদ্ধিসহ তা যুগোপযোগী করতে বলেছেন আদালত। পাশাপাশি জুয়া খেলার কোনো উপকরণ পাওয়া গেলে তা তাৎক্ষণিক জব্দ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করছেন। আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়, এ অভিযানের মুখ্য উদ্দেশ্যে হচ্ছে ক্যাসিনো ও জুয়া খেলাকে নিরুৎসাহিত করা। একই সঙ্গে জুয়া ও ক্যাসিনো বন্ধে আইনে সাজার পরিমাণ বাড়ানো উচিত বলেও মন্তব্য করেন আদালত। আদালত পর্যক্ষণে আরও বলেন, ১৮৬৭ সালের জুয়া আইনে ঢাকা মহানগরীর বাইরে জুয়া খেলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এ আইনে সাজার পরিমাণ খুবই নগণ্য। মাত্র ২০০ টাকা জরিমানা ও তিন মাসের কারাদণ্ড। উপরন্তু ঢাকা মহানগরীর ভেতরে জুয়া খেললে এ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ
অনুযায়ী, জুয়া আইন বৈষম্যমূলক। কারণ সংবিধানেই বলা হয়েছে, আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অপরাধ, অপরাধই। এখানে ধনী ও গরিবের বৈষম্যের সুযোগ নেই। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমেদ রানজীব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। পরে আইনজীবী রেদওয়ান আহমেদ রানজীব বলেন, এ রায়ের ফলে অর্থের বিনিময়ে কোনো খেলা আর খেলা যাবে না।
আইন অনুসরণ না করে ১৩টি ক্লাবে (ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, ধানমন্ডি ক্লাব, বনানী ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব ঢাকা, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ক্যাডেট কলেজ ক্লাব, চিটাগাং ক্লাব, চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাব, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব, সিলেট ক্লাব ও খুলনা ক্লাব) জুয়া, ডাইস ও কার্ডের মতো অভ্যন্তরীণ খেলা আয়োজনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৬ সালে হাইকোর্টে রিট করেন দুই আইনজীবী।