আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১১-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

বিশ্বকাপ মুজিববর্ষে জাতির জন্য উপহার বললেন প্রধানমন্ত্রী

সংসদ প্রতিবেদক
| প্রথম পাতা

দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে বৃষ্টি আইনে ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দলের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপর জয়কে মুজিববর্ষে জাতির জন্য উপহার বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেনÑ যুব ক্রিকেট দল দেশে ফেরার পর এ দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য তাদের জমকালো সংবর্ধনা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যুব দল দেশে ফেরার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বর্ণিল আয়োজনে গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ট্রফি জয়ী দল ১২ ঘণ্টার বিমান ভ্রমণ শেষে বুধবার বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছবেÑ নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন। ১৯৯৭ সালে আইসিসি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জাতীয় ক্রিকেট দলকে বর্ণিল সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল 
উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশ দল কোনো ট্রফি জিতেছে, আমরা তাদের সংবর্ধনা দিয়েছি। আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী বাংলাদেশ দলকেও জমকালো সংবর্ধনা দেব।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়রা আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে চার বছর কঠোর পরিশ্রম করেছে। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তারা পরিশ্রমের সুফল পেয়েছে। দলটি চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়েছে। তাদের (বাংলাদেশ যুব ক্রিকেটারদের) অনেক সাহস আছে এবং তারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে।’
মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশ দলের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ বিজয়ের উৎসব পালনের জন্য একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব দিলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ অর্জনের জন্য সবাইকে আরও বেশি কাজ করতে হবে। আমার প্রস্তাব হচ্ছেÑ এই খুশিতে সবাইকে একদিন বা ১ ঘণ্টা বেশি কাজ করতে হবে।
সোমবার বিকালে জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় বিশ্বজয়ী ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ক্রিকেটারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা জানানো, তাদের প্লটসহ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দল-মত-নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষ আনন্দিত। ছেলেরা পরিশ্রম করে যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন তাতে দুনিয়ার মানুষ আমাদের চিনতে পারছে। বাঙালি জাতি বাংলাদেশের মানুষ সবাই এ ছেলেদের প্রকাশ্যে ঢাকা আসার পর গণসংবর্ধনা দেওয়ার পক্ষে। এছাড়া রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের যথাপোযুক্ত সম্মানী দিয়ে তাদের যেন সম্মানিত করা হয়, সেটাও সবাই চায়।
গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, যুব বিশ্বকাপে আকবর বাহিনীর বিজয়ের মাধ্যমে ৪৯ বছরের আগের স্মৃতি মনে করিয়ে দিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধে যেভাবে পরিচিত ছিলাম, সেভাবে পরিচিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালিরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, বাঙালিরা এগিয়ে যাবে, বাঙালিরা কখনও মাথা নত করবে না। আমরা প্রমাণ করেছি, উপমহাদেশে বাংলাদেশ হচ্ছে অগ্রগামী দেশ। বাংলাদেশ যেভাবে এবার বিশ্বকাপ জয় করেছে, তেমনি ১৯৯৭ সালে আইসিসিতে জয়লাভ করেছিলাম। তাই আকবর বাহিনীকে সংবর্ধনা জানানো হোক। আকবর বাহিনী, অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা যেভাবে সম্মান বয়ে এনেছে, তাই তাদের শিক্ষাজীবনের সব খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নির্বাহ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। তাছাড়া সুন্দর জীবনযাপনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্লটসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। উপস্থিত সংসদ সদস্যরা তার বক্তব্যকে টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান। এদিকে অনির্ধারিত আলোচনা শেষ হলেও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেলক হকসহ অধিকাংশই যুব ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানান।