নতুন করোনা ভাইরাসে মৃত্যু হাজার ছাড়ানোর পর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায়ে বেশকিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে ‘সরিয়েছে’ চীন। বিবিসি জানিয়েছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র বলে বিবেচিত হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের প্রধান ও এ কমিশনে নিয়োজিত কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকও রয়েছেন। এ পর্যন্ত পদচ্যুতদের মধ্যে এরাই সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। ‘অনুদান পরিচালনায় অবহেলার’ দায়ে হুবেই রেডক্রসের উপপরিচালককেও অপসারণ করা হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রাদুর্ভাব চলাকালীন হুবেই ও অন্য প্রদেশের কয়েকশ’ ব্যক্তিকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে, অনেককে সতর্ক করা হয়েছে এবং কারও কারও বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট দায়িত্ব থেকে সরানো হলেও সেই ব্যক্তিকে পুরোপুরি ছাঁটাই করা হয়েছেÑ এমন নাও হতে পারে, তাদের পদাবনতিও হতে পারে। এসব পদক্ষেপকে তিরস্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে পদ হারানোর পাশাপাশি কর্মকর্তারা ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শাস্তির মুখেও পড়তে পারেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। যেমন রেডক্রসের উপপরিচালক ঝাং কু ইনকে ‘পার্টিগতভাবে কঠোরভাবে সতর্ক করে গুরুতর প্রশাসনিক ডিমেরিট’ দেওয়া হয়েছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। এর আগে চলতি মাসের প্রথম দিকে উহানের পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপপ্রধানকে সরানো হয়েছিল। মাস্ক বিতরণে প্রাসঙ্গিক বিধি লঙ্ঘন করায় তাকেও ‘পার্টিগতভাবে কঠোরভাবে সতর্ক করে গুরুতর প্রশাসনিক ডিমেরিট’ দেওয়া হয়। উহানের পর হুবেইয়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব আক্রান্ত শহর হুয়াংগাংয়ের স্বাস্থ্য কমিশনের প্রধানকেও পদ থেকে সরানো হয়েছে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাস সংকট সামাল দেওয়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে চীনের কর্তৃপক্ষগুলো। যে চিকিৎস শুরুর দিকে এ প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, কর্তৃপক্ষ সেটি আমলে না নিয়ে তাকে দমন করায় চীনজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার শুধু হুবেই প্রদেশেই ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে আর জাতীয়ভাবে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে আগের দিনের তুলনায় চীনজুড়ে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আগের দিন ৩ হাজার ৬২ জন আক্রান্ত হলেও সোমবার নতুন করে ২ হাজার ৪৭৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। হুবেইয়েও আগের দিনের তুলনায় নতুন আক্রান্তে সংখ্যা কমেছে। আগের দিন ২ হাজার ৬১৮ জন আক্রান্ত হলেও সোমবার নতুন করে ২ হাজার ৯৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৬৩৮ জনে এবং বিশ্বজুড়ে সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।