আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১২-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

বীর বরণে প্রস্তুত বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার
| খেলা

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী আকরব আলী, রকিবুল, শরিফুল, অভিষেক, শাহাদাত, শামীমরা আজ বিকালে ঢাকা ফিরবেন। তাদের বরণ করে নিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ। হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে দেওয়া হয়েছে বিয়েবাড়ির সাজ- সৌজন্য

প্রস্তুত বাংলাদেশ; অপেক্ষা বিশ্বসেরা ‘যুব’ ক্রিকেটারদের বরণ করে নেওয়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মঙ্গলবার বাংলাদেশগামী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বিমানে চড়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী আকরব আলী, রকিবুল, শরিফুল, অভিষেক, শাহাদাত, শামীমরা; বিশ্ব জয়ের সোনালি স্মারক নিয়ে আজ বিকাল ৪টা ৫৫ মিনিটে পা রাখবেন স্বদেশভূমে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর সেখানেই তাদের জন্য অল্প পরিসরে সংবর্ধিত করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে ফাইনালে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বৃষ্টি আইনে ৩ উইকেটে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী যুবা ক্রিকেটারদের বরণ করে নিতে হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে বিয়ে বাড়ির সাজ দেওয়া হয়েছে। বিসিবি কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বড় ব্যানারে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিশাল ব্যানার, পাশেই আরও দুটি ছোট ব্যানার, সেখানে ট্রফি হাতে দাঁড়িয়ে অধিনায়ক আকবর, পাশে শরিফুল, ইমন, রকিবুল ও জয়। মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মুখ ভাগের পুরো তিনতলা (উত্তরের হসপিটালিটি ডি-বক্স থেকে শুরু করে দক্ষিণে প্রধান নির্বাহীর কার্যালয় পর্যন্ত) জুড়ে লাগানো হয়েছে ঝাঁড়বাতি। শোভা পাচ্ছে আকবর-শরিফুলদের জয়ের উচ্ছ্বাস, লেখা হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন’। ছোট ব্যানারগুলোয় থাকলেও মূল ফটকের ব্যানারে স্থান পাননি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলী! তবে ২ নম্বর গেট বরাবর ওপর থেকে নিচে লম্বা করে টানানো ছোট দুটি ব্যানারে বসানো হয়েছে তাকে ফোকাস করে। মূল ব্যানারে অধিনায়কের ছবি না থাকা প্রসঙ্গে বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘আইসিসির কাছে ছবি চাওয়া হয়েছিল, যে গ্রুপ ছবিগুলো পেয়েছি, সেখানে আকবর থাকলেও জুম করলে ফেটে যাচ্ছিল। তাই আকবর অনুপস্থিত। আরও দুটি ব্যানার লাগিয়েছি, যেখানে আকবরকে কেটে বসানো হয়েছে, আসলে সবার ছবিই কেটে বানানো হয়েছে।’ বিমানবন্দর থেকে আকবর আলীদের নেওয়া হবে বিসিবিতে। এখানে তাদের জন্য থাকছে ছোট পরিসরে আয়োজন, এ পর্ব শেষে যতদ্রুত সম্ভব ক্রিকেটারদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেÑ মঙ্গলবার গণমাধ্যমকে জানান দেশের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন।
বিসিবিতে গণমাধ্যম পর্বে বিসিবি প্রধান নির্বাহী জানান, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বুধবার (আজ) সকালে আসার কথা ছিল, ফ্লাইট পরিবর্তন হয়ে সকালে না, আসবে বিকাল ৫টায়। এ ছেলেরা অনেক দিন ধরে দেশের বাইরে ছিল, তাই সবকিছু বিবেচনা করে স্বল্প সময়ের মধ্যে যতটুকু সম্ভব সেভাবে পরিকল্পনা করা হচ্ছে; কিছু অ্যারেঞ্জমেন্ট রাখছি। বিমানবন্দরে বরণ করে তাদের বিসিবিতে আনা হবে এবং এখানে কিছু আয়োজন রাখা হয়েছে। এরপর তারা পরিবারের কাছে চলে যাবে। এখন যে শিডিউল তাতে তাদের সকালে যাওয়ার কথা। যারা ঢাকাতে আছেন তারা রাতেই চলে যাবেন।’ আপাতত ছোট পরিসরে সংবর্ধনা দেওয়া হলেও সরকারের তরফ থেকে রয়েছে বিশাল আয়োজন। যুবাদের বিশ্বকাপ জয়কে মুজিববর্ষে জাতির জন্য উপহার বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেনÑ যুব ক্রিকেট দল দেশে ফেরার পর দুর্দান্ত সাফল্যের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমকালো গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর জাতীয় দলকে বর্ণিল সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই বাংলাদেশ ট্রফি জিতেছে, আমরা তাদের সংবর্ধনা দিয়েছি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলকেও জমকালো সংবর্ধনা দেব।’
সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় বিশ্বজয়ী ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানান সংসদ সদস্যরা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ক্রিকেটারদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সংবর্ধনা জানানো, তাদের প্লটসহ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জেতায় দল-মত-নির্বিশেষে সারা দেশের মানুষ আনন্দিত। ছেলেরা পরিশ্রম করে যে দৃষ্টান্ত রেখেছেন, তাতে দুনিয়ার মানুষ আমাদের চিনতে পারছে। বাঙালি জাতি বাংলাদেশের মানুষ সবাই এ ছেলেদের প্রকাশ্যে ঢাকা আসার পর গণসংবর্ধনা দেওয়ার পক্ষে। রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তাদের যথোপযুক্ত সম্মানী দিয়ে তাদের যেন সম্মানিত করা হয়, সেটাও সবাই চায়। গণফোরামের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর বিশ্বজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটারদের শিক্ষাজীবনের সব খরচ রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নির্বাহ করার আহ্বান জানান, সুন্দর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্লটসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।