রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের (টিবিএল) কার্যক্রম আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। সভায় টেলিটকের ফাইভজি সম্প্রসারণের একটি প্রকল্প অনুমোদন না করে একনেক থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন একনেকে ১০টি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলে নয়টির অনুমোদন দেওয়া হয়। ‘গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ফাইভজি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন’ প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হলেও অনুমোদন পায়নি। তৃতীয় কোনো পক্ষকে দিয়ে প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) করে পুনরায় একনেক সভায় উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন জানান, গ্রাম পর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ফাইভজি সেবা প্রদানে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হলে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সেটি আবার ফেরত দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, টেলিটকের দায়িত্ব বাড়াতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে টেলিটকের কার্যক্রম বাড়াতে হবে। এ প্রকল্প তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করে তারপর একনেকে উপস্থাপন করতে হবে। বর্তমানে সরকারি প্রতিষ্ঠান টেলিটকের ভয়েস ও ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের কাভারেজ অন্য বেরসকারি অপারেটরের তুলনায় অনেকটাই সীমিত। বিশেষত গ্রামাঞ্চলে কাভারেজ খুবই কম। টেলিটকের মোট টাওয়ার বা সাইট সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার। এর মধ্যে টু-জি বিটিএস যন্ত্রপাতি হলো সাড়ে ৪ হাজার, থ্রি-জি বিটিএস ৩ হাজার ৬২টি এবং ফোর-জি বিটিএস এক হাজার ১০০টি। এভাবে টাওয়ার ও টেলিকম যন্ত্রপাতির সংখ্যা অন্য প্রতিযোগীর তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। বর্তমানে শহরাঞ্চলে বিদ্যমান টেলিটকের ‘ফোরজি’ নেটওয়ার্ক ইউনিয়ন, গ্রাম পর্যন্ত প্রসারিত করে গ্রামাঞ্চলের মানুষকে সুলভমূল্যে দ্রুতগতির ফোরজি ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সরকার ঘোষিত লক্ষ্য অনুসারে, ২০২১-২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে ফাইভজি প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল সেবা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ বাস্তবায়নে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে দেশজুড়ে ‘ফাইভজি’ নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে সরকার। এ লক্ষ্যে ৩ হাজার ২৭৯ কোটি টাকার প্রকল্প চেয়েছিল টেলিটক। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা বলা হয়েছিল। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেÑ ৯ হাজার ৪১০ সেট টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম কেনা, ৩ হাজার বিটিএস সাইট নির্মাণ, ট্রান্সমিশন হাবের জন্য ১০০ সাইট প্রস্তুতকরণ, বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেনা, কাস্টমার কেয়ার ৩০ সাইট ও আসবাবপত্র কেনা।