প্রকৃতিতে এখনও বসন্ত আসেনি। কিন্তু বইমেলায় তরুণীদের সাজ মনে করিয়ে দিচ্ছে বসন্ত আসতে আর বেশি দিন বাকি নেই। হলুদ রঙের পোশাক আর ফুলের সাজগোজ তাই বলছে। বইমেলায় এমন সাজেই আসছেন তরুণ-তরুণীরা। আনুষ্ঠানিকভাবে বসন্তের ছোঁয়া লাগবে বৃহস্পতিবার। প্রকৃতির মতো জরাজীর্ণ ঝেড়ে ফেলে প্রফুল্ল চিত্তে মাতবে বাঙালি। মঙ্গলবার মেলা প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে এই দৃশ্যই দেখা গেছে। যেখানে শাড়ি আর হলুদ ফুলের টায়রায় সেজে কিশোরী-তরুণীরা সৌরভ ছড়াচ্ছে বসন্তের। আর হলুদ রঙের পাঞ্জাবি পরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন তরুণরাও।
শীতের আড়মোড়া ভাঙা তরুণ-তরুণীদের পদচারণে মঙ্গলবার মেলায় অন্যরকম আমেজ তৈরি হয়। এদিন বিকাল ৩টায় মেলা আরম্ভের আগেই গেটের সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়। গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে মেলায় প্রবেশ করেন তারা। এ যেন বসন্তের দোলা লেগেছে তাদের গায়। সেই সঙ্গে বিক্রিও শুরু হয়ে যায়। লেখক, দর্শনার্থী আর প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে এমন চিত্রই ফুটে ওঠে। এভাবেই জমে উঠেছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। প্রকৃতিপ্রেমীরা বলছেন, প্রতিবছর প্রকৃতির এ সময়ে পরিবেশ পাল্টে যায়। নেই তীব্র শীত, আবার গরমের অস্থিরতা নেই। বাঙালির বইমেলা শুধু বইকেনার আয়োজন নয়, বরং এটা একটা উৎসবও। এবারের পহেলা বসন্ত ও ভালোবাসা দিবস ছুটির দিনে পড়েছে। তাই ঢল সামাল দিতে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষকে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক কর্মী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের পরপরই চারদিকে বসন্তের আবহ দেখা যাচ্ছে। ব্যস্ততার কারণে এতদিন মেলায় আসতে না পারলেও আজকে মেলায় এসে অন্যরকম লাগছে। চারদিকে বাসন্তি ফুলের সমারোহ ছিল।
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সাংবাদিক আবু আলীর ভ্রমণ বিষয়ক ‘মেঘ পাহাড়ের আলিঙ্গন’ গ্রন্থ শনিবার থেকে অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাবে। জ্যোতিপ্রকাশ প্রকাশিত বইটি বাংলা একাডেমির মূল চত্বরের গোল্ডেন বাংলাদেশ (৭৯) এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (১০২), ম্যাগনাম ওপাস (৩ নম্বর স্টলে) বইটি পাওয়া যাবে। এর মূল্য ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।
এদিকে বিরহ, বিচ্ছেদ, প্রকৃতি, প্রণয়ে লেখা কবিতার ডালি নিয়ে সাজানো কাব্যগ্রন্থ ‘শব্দের বেখেয়ালি আঁচড়’। এটি প্রকাশিত হয়েছে নহলী প্রকাশনী থেকে। প্রচ্ছদ এঁকেছেন হাফিজ শিশির।
ভেঙে পড়ল গ্রামীণফোন টাওয়ার : অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মুঠোফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেটি মঙ্গলবার ভেঙে পড়েছে। যদিও এ ঘটনায় কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। বাংলা একাডেমির বিক্রয়, বিপণন ও পুনর্মুদ্রণ বিভাগের পরিচালক ও অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মেলা প্রাঙ্গণে অস্থায়ী ভিত্তিতে দুটি সিগন্যাল টাওয়ার নির্মাণ করে গ্রামীণফোন। বিকাল ৪টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে খাবারের স্টলের পাশে স্থাপিত টাওয়ারটি হঠাৎ ভেঙে পড়ে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। গ্রামীণফোনের প্রকৌশলীরা সমস্যাটির দ্রুত সমাধানে কাজ করছেন।