ফেডারেশন কাপ জিতে মৌসুম আরম্ভ করলেও প্রিমিয়ার লিগের শুরুতেই হোচট প্রায় খেয়ে যাচ্ছিল, তাও ঘরের মাঠ নীলফামারী স্টেডিয়ামে! বৃহস্পতিবার তিন মৌসুম পর প্রিমিয়ারে ফেরা উত্তর বারিধারা ক্লাবের বিপক্ষে ত্রাতা হয়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কিংসকে রক্ষা করেন বিশ্বকাপার ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস। চ্যাম্পিয়নদের মতো জয় দিয়ে ২০১৯-২০ প্রিমিয়ার লিগ শুরু করেছে চট্টগ্রাম আবাহনীও। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তারা ২-০ গোলে হারিয়েছে তিনবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে। গোল করেছেন চিনেদু ম্যাথিউ ও চার্লস দিদিয়ের। সিলেটে শেখ রাসেলকে ১-১ রুখে ১ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা ফিরেছে ব্রাদার্স।
নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ারে ফেরা বারিধারার কাছে ঘরের মাঠে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কা ভালো ভাবে জেঁকে বসেছিল কিংসের ঘাড়ে। ৮৭ মিনিটের গোলে পূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা। তবে ৮৬ মিনিটে চিত্র অন্যরকম হতে পারত; প্রতি আক্রমণে বারিধারার সুমন রেজার শট কিংসের পোস্টে লাগে। এর পরই বারিধারার প্রতিরোধ ভেঙে গোল করেন কলিন্দ্রেস। বদলি মাহবুবুর রহমান সুফিল বক্সের ভেতর বল ভাসান, বারিধারা গোলরক্ষক আজাদ হোসেন বেরিয়ে আসতেই দূরের পোস্টে ফাঁকায় থাকা কোস্টারিকান বিশ্বকাপার বল পান; তিনি ভুল করেননি বল গোলে পাঠাতে। অবশ্য বাকি সময়েও জয় নিশ্চিত করতে কিংস ফুটবলারদের লড়তে হয়েছে! শেষ মুহূর্তে সর্বনাশ হয়েছে দলের; ৮৯ মিনিটে ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
প্রিমিয়ার লিগের নতুন মৌসুম সূচনা ম্যাচে দুর্বল প্রতিপক্ষকে হারাতে বেশ ঘাম ঝরাতে হয়েছে অস্কার ব্রুজন শিষ্যদের। প্রত্যাশা মতো খেলতে না পারায় স্প্যানিশ কোচ কিছুটা বিব্রতও, তবে পরের ম্যাচে আরও ভালো খেলবে তিনি। চার বিদেশিকে একাদশে রেখে সেরা একাদশ মাঠে নামিয়েছিলেন কোচ। তবে বারিধারার আঁটসাঁট রক্ষণ আক্রমণভাগে তাদের সুবিধা করতে দিচ্ছিল না তেমন। বল পজিশনে এগিয়ে থেকেও তাই প্রথমার্ধে হাতেগোনা অল্প কয়েকবার গোলে শট নিতে পেরেছে বসুন্ধরা। এর ভেতর প্রথমার্ধ শেষের কিছু আগে বারিধারা গোলরক্ষক একবার গোলবঞ্চিত করেছেন কলিনদ্রেসকে। প্রতিপক্ষ বক্সে ঢুকে খেলোয়াড়দের সিদ্ধান্তহীনতাও প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার ভুগিয়েছে কিংসকে।
দ্বিতীয়ার্ধে সময়ের সঙ্গে বারিধারা রক্ষণে মনোযোগী হয়েছে আরেকটু বেশি। ওই রক্ষণ ভাঙতে কিংসকে করতে হয়েছে দ্বিগুণ পরিশ্রম। ন্যারো ডিফেন্ডিংয়ের সঙ্গে উইংয়েও খেলোয়াড় পাহারায় রেখে আলফাজ ভালোভাবেই জাপটে ধরেছিলেন বসুন্ধরার আক্রমণভাগকে। এরপরও কিংসের নামিদামি আক্রমণভাগে সুযোগ বের করে নিয়েছে। ম্যাচে খুব বেশি কিছু করতে না হলেও গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো শেষ পর্যন্ত বড় অবদান রাখেন দলের পয়েন্ট প্রাপ্তিতে। ৮৬ মিনিটে সুজনের শট পোস্টে লাগার আগে তার হাত ছুঁয়ে গেছে। কলিন্দ্রেসের গোলের পরও ফ্রি-কিক থেকে ভালো একটি সেভ করেছেন তিনি।
সিলেটে স্বাগতিক শেখ রাসেলকে রীতিমতো চমকেই দিয়েছে তারুণ্যনির্ভর ব্রাদার্স। ১৩ মিনিটে হেডে রাফায়েল গোল করে অলরেডদের এগিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি সাইফুল বারী টিটুর দল। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকে গুছিয়ে খেলে ১-১ করে দ্রুতই। বামপ্রান্তে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে জাতীয় দলের গোলরক্ষক আশরাফুল রানাকে হতভম্ব করে দেন ওতাবেক।