আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৪-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

হারানো যৌবন ফেরানোর চেষ্টা

সিরাজগঞ্জের কাটাখালি পুনঃখনন

এসএম তফিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ
| দেশ

সিরাজগঞ্জ শহরের বড়পুলের (ইলিয়ট ব্রিজ) নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাটাখালি পুনঃখনন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এতে কাটাখালি হারানো যৌবন ফিরে পাবে। চলতি বছর জুনে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ চলছে। শহরের প্রায় মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত বড়াল নদী এ এলাকায় কাটাখালি নামে পরিচিত। ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পের আদলে সম্প্রতি এ কাটাখালি সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছিল সিরাজগঞ্জ পৌরসভা। কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করার পর মাঝপথে বিভিন্ন কারণে কাজ থেমে যায়। এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী একেএম রফিকুল ইসলাম জানান, অবশেষে এ প্রকল্প পুনরুজ্জীবিত করার জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৬৪ জেলার ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে ২২ কিলোমিটার কাটাখালি প্রকল্পের খনন কাজ শুরু করা হয়। যমুনা নদীর উৎসমুখ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাঐতারা থেকে শহরের মিরপুর, বাজার স্টেশন, রেলওয়ে কলোনি হয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের পাশ দিয়ে জানপুর, বাহিরগোলা এবং চন্দ্রকোণা হয়ে কালিঞ্জার ভেতর দিয়ে ইছামতি নদী পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার কাটাখালি খনন করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এ কাজের ৩৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এ প্রকল্পের কাজ চলতি অর্থবছরের জুন মাসে শেষ হবে। এদিকে এ প্রকল্পের কাজ শিডিউল ভিত্তিতে হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে হবে বলে বিশিষ্টজনরা অভিমত ব্যক্ত করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ বেনিয়াদের প্রমোদতরি এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্গো, ছোট-বড় লঞ্চ, পালতোলা নৌকা, বার্জ চলত এ কাটাখালি দিয়ে। যমুনা নদীর সঙ্গে ছিল এ খালের সরাসরি সংযোগ। ব্রিটিশ আমল থেকে স্বাধীনতা-পরবর্তী দুই দশক পর্যন্ত কাটাখালি প্রবহমান ছিল। যমুনা নদীর সঙ্গে সংযোগ বন্ধ হওয়ায় ক্রমাগতভাবে এ কাটাখালির দুই পাড় অবৈধ দখলে চলে যায়। এছাড়া তৎকালীন প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কাটাখালির ওপর নির্মিত হয় পিলারবিহীন ইলিয়ট ব্রিজ (বড়পুল)। প্রথমে এ ব্রিজে ছিল কাঠোর পাটাতন এবং পরে সংস্কারে ইট-সিমেন্টের কংক্রিট দেওয়া হয়। সিরাজগঞ্জ শহরকে দেখার জন্য কাটাখালির ওপরে ৩০ ফুট উঁচু করে ইংরেজ এসডিও বিটসন বেল আইসিএস ১৮৮২ সালে বাংলার তৎকালীন ছোটলাট স্যার আলফ্রেড ইলিয়টের নামানুসারে এ ব্রিজ তৈরি করেন। স্টুয়ার্ট হার্টল্যান্ড নামের ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি ১৮০ ফুট লম্বা আর ১৬ ফুট চওড়া ইলিয়ট ব্রিজের প্রধানতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে কোনো পিলার বসানো হয়নি।