রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর শেষে চাকরির পেছনে না ছুটে কুষ্টিয়ার আবদুল কুদ্দুস ওরফে মাসুদ সমন্বিত খামার করে এখন কোটিপতি। সৃষ্টি করেছেন এলাকার ৩০ যুবকের কর্মসংস্থান। তাকে এখন কুষ্টিয়ার মানুষ আদর্শ ভাবছেন। প্রিয়মুখও বটে। শিক্ষাজীবন শেষ করে বাপ-দাদার পেশায় সুখ খুঁজতে বাবার সম্পত্তিকে কাজে লাগিয়ে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী এলাকায় ২১ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেন সাদমান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি খামারবাড়ি। এখানেই রয়েছে গরুর খামার, পোলট্রি ফার্ম ও মাছ চাষের জন্য ৫৫ বিঘার পুকুরও রয়েছে তার। শুধু তাই নয়, খামারবাড়ি আঙিনায় গড়ে তুলেছেন কলা, আম আর লেবুর বাগান। আবার নিজস্ব পতিত জমিতে ঘাস চাষ করে এখান থেকেই গরু মোটাতাজাকরণ কাজটিও করছেন তিনি। তাকে ঘিরে স্বাবলম্বী হচ্ছে এলাকার ৩০টি পরিবার। নিজের জমানো অর্থ ও রূপালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার সহযোগিতায় গড়ে তুলেছেন এ খামারবাড়ি।
বৃহস্পতিবার সরেজমিন এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, এ খামারবাড়ি শুধু মাসুদের নয়, এলাকাবাসীর স্বপ্ন এটি। সরকারিভাবে সাদমান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজকে সহযোগিতা করলে তার সুফল এলাকাবাসীও ভোগ করবেন। স্বাবলম্বী হবে এখানকার মানুষও। কথা হলো মাসুদের সঙ্গে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে কেন এ খামারবাড়িতে? এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বলেন, বাপ-দাদার পেশায় সুখ খুঁজতে বাবার সম্পত্তিকে কাজে লাগিয়ে এ খামারবাড়ি গড়ে তুলেছি। দেশের প্রেক্ষাপটে আমরা খাদ্য ঘাটতিতে আছি। আমাদের খাবারের বড় একটা অংশ আসে দেশের বাইরে থেকে, আমদানির মাধ্যমে। অথচ আমাদের যে সম্পদ আছে, তার সুষ্ঠু ব্যবহার করলেই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি। এছাড়া শিক্ষিত মানুষ কৃষিতে না এলে কৃষির উন্নয়ন হবে কী করে। সেই ভাবনা থেকে আজকের এ খামারবাড়ির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেছি। বরাবর চিন্তা ছিল এলাকার বেকার যুবকদের জন্য কিছু করব, নিজের জন্য কিছু করব। আজ সফলতা পেয়েছি। নিজের অর্থ ও রূপালী ব্যাংক আলমডাঙ্গা শাখার সহযোগিতায় গড়ে তুলি এ খামারবাড়ি। তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে আমাকে সহযোগিতা করা হলে এ খামারবাড়িতে আরও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার পাশাপাশি তার সুফল এলাকাবাসীও ভোগ করবে। উচ্চশিক্ষিত মাসুদের এ আধুনিক মানের কৃষি কর্মকা- স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ স্বপন বলেন, সাদমান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজকে আরও এগিয়ে নিতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মশিউর রহমান বলেন, মাসুদের এ আধুনিক মানের বিজ্ঞানসম্মত বহুমুখী সাদমান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের কৃষি কর্মকা- স্থানীয় শিক্ষিত বেকার যুবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ সৃষ্টি করেছে। আমরা তার পাশে থাকতে চাই।