বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারসংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনার বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৬ এপ্রিল দিন রেখেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইদ্রিসুর রহমান ও ব্যারিস্টার সারা হোসেন। পরে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা রিভিউ আবেদন করি। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জঙ্গিসহ বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় বিদ্যমান আইনের সঙ্গে কোন কোন নির্দেশনা অসঙ্গতিপূর্ণ নয়, সে বিষয়গুলো আদালতে তুলে ধরতে আমরা রিভিউ করেছি। এ বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল ২০১৬ সালের ২৪ মে আপিল বিভাগ কিছু নির্দেশনা দিয়ে খারিজ করে দেন।
১৯৯৮ সালে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডের গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে মারা যান রুবেল। এরপর তৎকালীন সরকার রুবেল হত্যা তদন্তের জন্য বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত শেষে কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়। এ সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) হাইকোর্টে রিট করে। ওই রিট মামলার চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল এ ব্যাপারে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ছয় মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান সংশোধন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ধারাগুলো সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়।
এর বিরুদ্ধে আপিলে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। আপিল আবেদনে বলা হয়, এ দুটি ধারা সংশ্লিষ্ট যে আইনে রয়েছে, তা যথেষ্ট ও সঠিক। এজন্য আইন প্রণয়ন বা সংশোধনের কোনো প্রয়োজন নেই। ২০০৪ সালে আপিল বিভাগ সরকারের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) মঞ্জুর করেন। তবে হাইকোর্টের ওই নির্দেশনাগুলো স্থগিত করেননি। দীর্ঘদিন পর ২০১৬ সালের ১৭ মে আপিল শুনানি শেষে ২৪ মে রায় ঘোষণা করেন।