আজকের পত্রিকাআপনি দেখছেন ১৬-০২-২০২০ তারিখে পত্রিকা

ফাংশনাল ওভারিয়ান সিস্ট : কি করা উচিত

ডা. নুসরাত জাহান
| সুস্থ থাকুন

শরীরে যদি কোনো কারণে হরমোনের তারতম্য হয় তবে ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক্যাল সিস্ট তৈরি হতে পারে। এমন কিছু সিস্ট হচ্ছে ফলিকুলার এবং কর্পাস লুটিয়াম সিস্ট। শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হলে ওভুলেশন বা ডিম্বস্ফুটন ব্যাহত হয়। নিয়মিতভাবে ডিম্বস্ফুটন না হলে ডিমের এ আবরণীর মধ্যে পানি জমে পরবর্তী সময়ে ফলিকুলার সিস্টে পরিণত হয়

ওভারিয়ান সিস্ট এবং টিউমার দুটি আলাদা বিষয় হলেও অনেক সময় এ নিয়ে কনফিউশন থেকে যায়, যার ফলে ওভারিতে ফাংশনাল/ফিজিওলজিক্যাল সিস্ট থাকলেও সঠিকভাবে বুঝতে না পেরে রোগীরা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। এ ধরনের সিস্টগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনাআপনি মিলিয়ে যায়, যেগুলো একটা নির্দিষ্ট সময়ের পরও থেকে যায় সেগুলো ওভারিয়ান টিউমার হিসেবে ধরা হয় এবং সার্জারি করার প্রয়োজন পড়ে।

ওভারিতে ফাংশনাল সিস্ট তৈরির কারণ : শরীরে যদি কোনো কারণে হরমোনের তারতম্য হয় তবে ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক্যাল সিস্ট তৈরি হতে পারে। এমন কিছু সিস্ট হচ্ছে ফলিকুলার এবং কর্পাস লুটিয়াম সিস্ট। শরীরে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হলে ওভুলেশন বা ডিম্বস্ফুটন ব্যাহত হয়। নিয়মিতভাবে ডিম্বস্ফুটন না হলে ডিমের এ আবরণীর মধ্যে পানি জমে পরবর্তী সময়ে ফলিকুলার সিস্টে পরিণত হয়। 

ফাংশনাল ওভারিয়ান সিস্টের লক্ষণ
# সাধারণত এরা অংুসঢ়ঃড়সধঃরপ (অ্যাসিম্পটোমেটিক) হয়ে থাকে, অর্থাৎ কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
# বিভিন্ন রকম ওভারিয়ান সিস্টের মধ্যে ফলিকুলার সিস্ট সবচেয়ে কমন, যা পলিসিস্টিক ওভারিতে হয়ে থাকে। এ ধরনের রোগীরা অনিয়মিত মাসিক এবং বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যায় ভুগে থাকে। এছাড়া এ সিস্টের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্য যে সমস্যাগুলো থাকতে পারে তা হচ্ছেÑ অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি, শরীরে অবাঞ্চিত লোম, রক্তের ব্লাড সুগার বা কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি। 

ডায়াগনোসিস : ফাংশনাল সিস্টের সাইজ সাধারণত ৫ থেকে ৭ সেমি হয়ে থাকে, ভিতরে ক্লিয়ার ফ্লুয়িড/পানি থাকে, আল্ট্রাসাউন্ড (খড়বিৎ ধনফড়সবহ/ঞঠঝ)-এর মাধ্যমে ডায়াগনোসিস হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমার মার্কার যেমনÑ ঈঅ-১২৫, গজও, ঈঞ ংপধহ দিয়ে এর প্রকৃতি (নবহরমহ ড়ৎ সধষরমহধহঃ) সম্পর্কে ধারণা করা হয়।

চিকিৎসা : অন্যান্য ওভারিয়ান টিউমারের চিকিৎসা অপারেশন হলেও ওভারিয়ান সিস্টের চিকিৎসায় অপারেশন দরকার হয় না, হরমোনাল ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। সাধারণত ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো চলে যায়। এসময় অবশ্যই একজন গাইনোকোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে থাকতে হবে।
তবে অপারেশন লাগতে পারে, যদিÑ
# ওভারিয়ান সিস্ট টুইস্ট/পেঁচিয়ে যায় অথবা জঁঢ়ঃঁৎব (ফেটে) হয়। এক্ষেত্রে হঠাৎ করে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয় এবং ইমার্জেন্সিভাবে চিকিৎসা করাতে হয়।
# দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকলে অথবা ধীরে ধীরে সাইজ বড় হলে কিংবা টিউমারের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে।
# এবং মহিলাদের ৪০ বছরের পর যেকোনো ওভারিয়ান সিস্ট/টিউমার গুরুত্বের সঙ্গে চিকিৎসা করাতে হবে, কারণ এক্ষেত্রে গধষরমহধহপু বা ক্যান্সার হওয়ার চান্স থাকে।
মনে রাখতে হবে, ওভারির ডারময়েড সিস্ট এবং চকলেট সিস্টের নামকরণে সিস্ট থাকলেও এগুলো ফাংশনাল বা ফিজিওলজিক্যাল নয়। এগুলো ওভারির প্যাথলজিকাল টিউমার, তাই এর চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন।

ডা. নুসরাত জাহান
এমবিবিএস, এফসিপিএস (অবস-গাইনি) 
সহযোগী অধ্যাপক (অবস-গাইনি) 
ডেলটা মেডিকেল কলেজ, 
মিরপুর-১, ঢাকা। 
০১৯২৪০৮৭৮৩১