বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার আগে বিকেএসপিতে বিসিবি একাদশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং ঝালিয়ে নিতে নেমে পড়েছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা। আর মঙ্গলবার মিরপুরে অনুশীলনে নেমেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট জিতেছিল ২০১৮ সালের নভেম্বরে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর টানা ৬ ম্যাচে হারের লজ্জা, এর মধ্যে বিদেশের মাটিতে পাঁচটিই ইনিংস ব্যবধানে হার, নিউজিল্যান্ড-ভারতের কাছে দুটি করে ও পাকিস্তানের কাছে এক ম্যাচে। ইনিংস ব্যবধান ছাড়া হারা ম্যাচ ঘরের মাঠে, সেটি আবার টেস্ট ক্রিকেটের পুঁচকে দল আফগানিস্তানের কাছে, গেল সেপ্টেম্বরে ২২৪ রানে।
হারতে হারতে খাদের কিনারে চলে যাওয়া বাংলাদেশ দল একটা জয়ের মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে চাইছে। সামনে সুযোগ, বাংলাদেশ সফরে এসেছে জিম্বাবুয়ে। সমালোচকরা ‘প্রিয় প্রতিপক্ষের সিরিজ’ বলে বিদ্রƒপ করতে ছাড়ছেন না। জাতীয় দলের স্পিনার তাইজুল ইসলামের (৮/৩৯) সেরা বোলিং ফিগার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই! ফলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ খেললেই স্বাভাবিকভাবে তার নাম আসে, তবে এমন স্বীকৃতি পছন্দ নয় তাইজুলের। বলেছেন, ‘আমি শুধু জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে উইকেট শিকার করি না, অন্য প্রতিপক্ষের বিপক্ষেও উইকেট পেয়েছি। আগেও বলেছি, প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, সঠিক লাইনে বল করতে হবে। ভালো বল না করা গেলে জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’
ব্যাটসম্যানরা ছন্দে নেই, পেসাররা চিরকাল সেরা অস্ত্র নন। সাদা পোশাকে একমাত্র স্পিনারদের শক্তিতে লড়াই করত বাংলাদেশ। স্পিনারদের নৈপুণ্যও আশাজাগানিয়া নয়! নিষিদ্ধ সাকিব ছাড়া বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের ভার তাইজুলের ঘাড়ে, দায়িত্বে তিনি কতটা অবদান রাখতে পারছেনÑ প্রশ্নটা যেতেই বেশ অভিমানী সুর, ‘বিষয়টা যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে আমরা এখন যারা স্পিনার আছি তারা ভালো স্পিনার না। সাকিব ভাইয়ের মতো নয়, এটাই সত্যি। সাকিব ভাই থাকলে যেহেতু ভালো হতো, এখন যেহেতু হচ্ছে না তাহলে আমরা ভালো না, এটাই উত্তর।’ তাইজুল খেদ বুকে পুষে জানান, তারা মানসম্পন্ন বোলার না বলেই আসছে না সেরা ফল, ভালো ফলের জন্য ওই মানের খেলোয়াড় আসতে হবে। এখন ওই মানের খেলোয়াড় নেই, এটাই তো? ওই মানের স্পিনার আসলে হইনি বলে ফল হচ্ছে না।’ তাইজুল ২৮ টেস্টে নিয়েছেন ১০৮ উইকেট। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ টেস্টে ৩৫ উইকেট! ‘প্রিয় প্রতিপক্ষ’কে পেয়ে আবার তেতে ওঠার বারুদ পাচ্ছেন? কথাটায় আপত্তি তাইজুলের, মনে করিয়ে দিলেন, ‘এ কথাটা আসলে ভালো লাগল না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুধু উইকেট পেয়েছি তেমন না। আরও অনেক দলের সঙ্গে খেলে উইকেট পেয়েছি। আপনি যাদের বিপক্ষেই খেলেন, ভালো জায়গায় বল না করলে সাফল্য পাবেন না। ওরা তো একেবারে খারাপ দল তাও কিন্তু না।’
বড় ফরম্যাটে টানা ছয় ম্যাচ হেরে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে বাংলাদেশের, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতে হারের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার পাশাপাশি পুরোনো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে মরিয়া ক্রিকেটাররা।