খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে টেলিফোনে যা কথা হয়েছে তার রেকর্ড আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। দুর্নীতির মামলায় দ-িত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার মুক্তির আর্জি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দিতে মির্জা ফখরুল ফোন করেছিলেন বলে শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। ওইদিন প্যারোলে মুক্তির বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে ফখরুল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, প্যারোল নিয়ে কোনো কথা তিনি বলেননি।
মির্জা ফখরুলের ফোন করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) আমার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সেটির রেকর্ড আছে। আমি আর নিচে যেতে চাই না। উনি নিজেকে কেন নিচে নিয়ে যাচ্ছেন? ফখরুলের ওই দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিথ্যা কথা কেন বলব? মির্জা ফখরুল সাহেব আমাকে ফোন করেছেন। ফোন করে অনুরোধ করেছেন খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটু কথা বলার জন্য। আমাকে তিনি বলেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়েছি। অসত্য কথা আমি কেন বলব? তিনি (মির্জা ফখরুল) আমাকে অনুরোধ করেছেন। এখন তিনি কি প্রমাণ করতে চান যে তিনি আমাকে অনুরোধ করেননি? তাহলে কিন্তু প্রমাণ দিয়ে দেব। কারণ টেলিফোনে যে সংলাপ, সেটি তো আর গোপন থাকবে না। এটা বের করা যাবে। ফোনে কথা বললে এটা কি গোপন রাখা যাবে? এটার রেকর্ড আছে না? আমি তাকে ছোট করতে চাই না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির চেয়ে তার দল ও পরিবার ‘রাজনৈতিক ফায়দা তোলার দিকে’ বেশি নজর দিচ্ছে। ফখরুল সাহেব একবার বলেন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খারাপ, তিনি মরনের পাড়ে। আবার পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাকে মানবিক কারণে মুক্তি দেওয়া হোক। তার প্যারোল জাতীয় বিষয়ও আছে। প্যারোল দিতে গেলে একজন বন্দিকে, বন্দির চেয়েও বড় কথা তিনি কনভিক্টেট প্রিজনার। কনভিক্টেট প্রিজনারকেও প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার নিয়ম আছে। কিন্তু তারা প্যারোলের আবেদনই করেনি। কাজেই সেই নিয়মটি আছে কি না, যুক্তিযুক্ত কোনো কারণ আছে কি না তাকে মুক্তি দেওয়ার, সেটা বিবেচনার কোনো অবকাশ নেই। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে বিএনপি নাটক করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে তারা সরকার হঠানোর জন্য নতুন ষড়যন্ত্র করছে। বয়স বিবেচনায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যেমন থাকার কথা তেমনই আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব ঝানু রাজনীতিবিদ হতে পারেন, কিন্তু তিনি কি ঝানু চিকিৎসক যে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারেন? চিকিৎসকরা বলছেন, বার্ধক্যের কারণে যেই অবস্থানে থাকার কথা, তার অবস্থা সেই অবস্থানে আছেন। তরুণ-তরুণীর মতো শারীরিক অবস্থা তার নেই। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা যা থাকার তা-ই আছে। কোনো প্রকার অবনতি হচ্ছে না। শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসা তাকে দিচ্ছেন। খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, তার মুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তার মামলা দুর্নীতির মামলা। সরকার কীভাবে মুক্তি দেবে? যদি রাজনৈতিক মামলা হতো তাহলে রাজনৈতিক বিবেচনায় মুক্তির প্রশ্ন ছিল। কিন্তু যেহেতু এ মামলা রাজনৈতিক নয়। এই মামলা দুর্নীতির মামলা।