আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে পুনরায় মনোনয়ন না পাওয়া প্রসঙ্গে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, মেয়রের পদ বড় না, রাজনীতিটাই বড়। কেউ যদি বলত তিনি মেয়র হতে চান, আমি ছেড়ে দিতাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে দলই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতভাগ মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার কোনো মানে হয় না। তিনি বলেন, বিশ্বাস করেন, মেয়র পদ না পেয়ে আমি কোনোভাবে হতাশ, বিক্ষুব্ধ বা নিরাশ হইনি। তবে একটি বিষয় আমাকে কষ্ট দিয়েছে। যে সংগঠনের জন্য জীবন-যৌবন দিয়েছি, তারাই আমাকে বঙ্গবন্ধুর খুনির দোসর বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে। অথচ আমি প্রথম পরিকল্পনা করে বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল (অব.) রশিদের সভায় হামলা চালিয়েছিলাম। ফ্রিডম পার্টির নেতাকর্মীদের খুঁজে বের করে চট্টগ্রাম থেকে তাড়িয়ে ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে সর্বপ্রথম আমরা পাঁচ-ছয়জন মিছিল করেছিলাম। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিতরণের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজ দলের কর্মীরাই একটি ছবি প্রকাশ করেন। এ ছবি প্রকাশ করে প্রচারণা চালানো হয়Ñ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ফাঁসির দ-প্রাপ্ত এক আসামির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেয়র নাছিরের দীর্ঘদিন ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক আছে। ওই ছবির প্রসঙ্গ টেনে নাছির বলেন, চার দিন আগে আমাকে একটি ছবি দেখানো হলো। সেখানে দেখলাম, একটা ছবিতে গোল চিহ্ন করা হয়েছে, পাশে একরাম খান নামে একটি ছেলে। সে ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিল। ছাত্রলীগের শাহজাহান-কলিম কমিটির ১ নম্বর সহ-সভাপতি ছিল। সে এখন তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় একটি কলেজের অধ্যক্ষ। সেখানে থানা আওয়ামী লীগের মেম্বার এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি। একরামের সঙ্গে পরিচয়ের প্রসঙ্গ টেনে নাছির বলেন, আমি তাকে চিনি এভাবে, আমার চরম দুঃসময়ে একজন ব্যাংকারের মাধ্যমে, যিনি তার সঙ্গে একই কমিটিতে ছিলেন। দুঃসময়ে একদিন রাতে একরামের বাড়িতে গিয়ে একনাগাড়ে প্রায় দেড়-দুই মাস একটি কক্ষে ছিলাম, সূর্যের আলোও দেখিনি। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের স্বাগত বক্তব্যের পর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজের সহসভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সিইজের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসীন চৌধুরী, বর্তমান কমিটির সদস্য কাজী আবুল মনসুর এবং সিইউজের সাবেক সভাপতি শহীদ উল আলম।